Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘আর কত বয়স হলে বয়স্ক ভাতার কার্ড পাবো’

আসাদ গাজী, শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:০৯ PM
আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:০৯ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


মধন মণ্ডল বয়স ১০৫ বছর। স্ত্রীর বয়সও ৮০বছর, ছেলে সন্তান থেকেও নেই, নেই ভালোমত থাকার কোনো জায়গা। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন। একা-একা চলতে ফিরতে কষ্ট হয় খুবই। বেঁচে থাকতে যে মৌলিক চাহিদার প্রয়োজন তারও ন্যূনতম পূরণ করতে পারছেন না তিনি। পাচ্ছেন না সরকারি কোনো সহায়তা।

মধন মণ্ডল হিন্দু সম্পাদয়ের প্রবীণ ব্যক্তি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বিষণ্ণতায় ভুগছেন। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশে মদন মণ্ডল চেষ্টা করেও পাচ্ছেন না বয়স্ক ভাতা। তাইতো তার একটাই প্রশ্ন আর কত বয়স হলে আমি বয়স্ক ভাতা পাব?

সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন নিজের কষ্টের কথা। গণমাধ্যম কর্মী দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, ‘আর কত বয়স হলে আমরা দুজন বয়স্ক ভাতা পাব? অনেকবার আমি ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির কাছে একটা ভাতার কার্ড করে দেওয়ার অনুরোধ করেছি। কোনোভাবে একটা বয়স্ক ভাতার কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি।

করুণ আকুতি আর জলেভেজা চোখে তিনি আরও বলেন, সমাজের অনেকের কাছে আমার স্ত্রীর ধরনা দিয়েছে কিন্তু মিলছে শুধু বছরের পর বছর আশ্বাস ‘আগামীতে আসলে পাবেন’। এই আশ্বাসটুকু ছাড়া আর কিছুই পাননি তিনি। ছেলে সন্তান থাকার পরেও তারা আমার ভরণপোষণ বা ওষুধ কেনার টাকা পর্যন্ত দেয় না। বাধ্য হয়ে মেয়ে আমাকে তার সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতা করে। তিনি সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে একটা বয়স্ক ভাতার কার্ডের দাবি করেন।

মধন মন্ডলের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কার্তিকপুর গ্রামে। হতদরিদ্র মদন মণ্ডলের একে বারেই চলাচল করতে পারে না তাই তার স্ত্রী এখন জীবনের তাগিদে অন্যের বাড়িতে ফাইফরমাশ খাটেন। কখনো কখনো ছোট মেয়ের বাড়িতে থেকে দিনাতিপাত করছেন।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য জোসনা রানী বলেন, সত্যিই মদন মণ্ডল একেবারে অসহায়। তবে আগামীতে বয়স্ক ভাতাতে তার নাম তালিকাভুক্ত করা হবে।

এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ আসেনি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে তালিকা পাঠানো হয় তার ভিত্তিতেই আমরা কার্ড সরবরাহ করে থাকি। এর বাইরেও বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার কার্ড পাওয়ার যোগ্য কেউ থাকে তাহলে আমি ব্যবস্থা করে দিবো।

এ ব্যাপারে রামভদ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিপ্লব সিকদার বলেন, মদন মণ্ডলের বিষয়টা আমার জানা ছিল না। শুনেছি তার ছেলে একজন ব্যাংকে চাকরি করে। তবে রয়স অনুযায়ী তিনি বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য। আজকেই তার ব্যাপারে খোজ খবর নিয়ে দেখি কি করা যায়।

Bootstrap Image Preview