Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আগুন নেভানোর এই সিলিন্ডার ব্যবহার করবেন যেভাবে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০১৯, ০৫:০৯ PM
আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯, ০৫:০৯ PM

bdmorning Image Preview


যন্ত্র আছে যন্ত্রের মতো। আচমকা আগুন লাগলে সেই অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র কাজে লাগানোর নিয়ম জানা নেই তেমন কারও! সুপার শপ, রেস্টুরেন্ট কিংবা অফিসে চোখে পড়ে ছোট্ট এই লাল সিলিন্ডার। যার ভেতরে থাকা উপাদান আগুন নেভাতে সাহায্য করে।

আসুন জেনে নেই এই যন্ত্রের ব্যবহার-

আগুন কেমন হতে পারে

আগুন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। জেনে নিন কোন আগুন কিভাবে নেভাতে হয় -

Class A - দৈনন্দিন ব্যবহৃত যে কোনো দাহ্য বস্তূ যেমন- কাঠ, কাগজ, কাপড়ের আগুন এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এই ধরণের আগুন সাধারণত পানি অথবা শুকনো কেমিক্যাল পাউডার দিয়ে নেভানো হয়।

Class B - দাহ্য তরল এবং দাহ্য গ্যাস যদি আগুনের উৎস হয়। যেমন: তেল, গ্যাসোলিন, পেইন্ট ইত্যাদি। এই ধরণের আগুন শুকনো কেমিক্যাল পাউডার অথবা ফোম দিয়ে নেভানো হয়।

Class C - যে কোনো ইলেকট্রিক্যাল ইকুপমেন্ট যেমন- জেনারেটার/মোটর, ট্রান্সফর্মারের আগুন এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এই ধরনের আগুনে কখনোই পানি ব্যবহার করা যাবে না। কারণ পানি তড়িৎ পরিবাহী। পানি ব্যবহার করলে তড়িতাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রেও শুকনো কেমিক্যাল পাউডার বা কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার হয়ে থাকে।

Class D - দাহ্য ধাতু যেমন সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়ামের আগুন এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়।

Class K - রান্নার তেল, ভেজিটেবল অয়েল অথবা গ্রিজ যদি আগুনের উৎস হয়। এজন্য ওয়েট কেমিক্যাল বা ওয়াটার মিস্ট এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করা হয়।

দৈনন্দিন জীবনে সাধারণত Class-A অথবা Class-B ধরণের আগুন নেভানোর বেশি প্রয়োজন হয়। বর্তমানে যেসব শুকনো কেমিক্যাল এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করা হয় সেগুলো Class-A, Class-B, Class-C তিনক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যায়।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

আগুন নেভানোর এই যান্ত্রের নাম ফায়ার এক্সটিংগুইসার। প্রাথমিক অবস্থাতেই আগুনের উপর ফায়ার এক্সটিংগুইসার প্রয়োগ করতে হয়। এর হ্যান্ডেল ডান হাতে ধরে বাম হাত দিয়ে টান দিয়ে সেফটি পিন খুলে ফেলতে হবে। এরপর বাম হাতে হোস পাইপ আগুনের দিকে তাক করে ডান হাত দিয়ে বাটন বা লিভার চাপতে হয়।

সতর্কতা

ফায়ার এক্সটিংগুইসার সবসময় বাতাসের অনুকূলে থেকে প্রয়োগ করতে হয়। যাতে কেমিক্যাল পাউডার বা গ্যাস বা ফোম উড়ে এসে নিজের গায়ে না পড়ে। আগুনের উৎপত্তিস্থলের সর্বোচ্চ ২ মিটার দূর থেকে ফায়ার এক্সটিংগুইসার প্রয়োগ করতে হয়। আগুন ছোট অবস্থায় থাকতে ফায়ারম্যানের অপেক্ষায় না থেকে হাতের কাছে থাকা ফায়ার এক্সটিংগুইসারের মাধ্যমে আগুন নেভানো যায়।

ফায়ার এক্সটিংগুইসার একবার ব্যবহার হয়ে গেলে একই সাথে পুরোটাই ব্যবহার করে ফেলতে হয়। এটি দ্বিতীয়বার ব্যবহারযোগ্য নয়।

কোন কারণে এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করেও আগুনের নিয়ন্ত্রণ আনা না গেলে বা আগুন বেড়ে গেলে ধরে নিতে হবে আগুনের প্রাথমিক অবস্থা পেরিয়ে গেছে। তখন অবশ্যই নিরাপদ অবস্থানে চলে যেতে হবে এবং দ্রুত ফায়ারম্যানকে খবর দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।

কার্বন-ডাই-অক্সাইড টাইপ এক্সটিংগুইসার প্রয়োগ করা হলে আগুন নিভুক বা না-নিভুক, ঘটনাস্থলে বেশি সময় অপেক্ষা করা যাবে না। নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইড খুব তাড়াতাড়ি আশপাশে অবস্থানকারী ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে।

উন্মুক্ত স্থানে বা ধাবমান বাতাসযুক্ত স্থানে কার্বন-ডাই-অক্সাইড টাইপ এক্সটিংগুইসার প্রয়োগ খুব একটা কার্যকর হয় না। এক্ষেত্রে বালি বা পানি (প্রয়োজন অনুযায়ী) ব্যবহারই উত্তম।

প্রকারভেদ

প্রতিটি ফায়ার এক্সটিংগুইসারের গায়ে লেখা থাকে তাতে কী ধরনের কেমিক্যাল রয়েছে। সিলিন্ডারের গায়ের রং দেখেও বুঝা যায় তা কী ধরনের এক্সটিংগুইসার। যেমন- লাল রং হচ্ছে ওয়াটার টাইপ, ক্রীম কালার হচ্ছে ফোম টাইপ, কালো রং হচ্ছে কার্বন-ডাই-অক্সাইড টাইপ এবং নীল রঙের এক্সটিংগুইসার হচ্ছে পাউডার টাইপ।

অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়াতে হাতের কাছে ফায়ার এক্সটিংগুইসার রাখতে ও ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

Bootstrap Image Preview