Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঝিনাইদহে ২১১ জন ডাক্তারের স্থলে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৬৩ জন

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০১৯, ১০:৫৫ AM
আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯, ০১:৪৫ PM

bdmorning Image Preview


ঝিনাইদহ ছয় উপজেলার হাসপাতালগুলোতে দিন দিন রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেলেও ডাক্তারের সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। আবার হাসপাতালে শূন্য পদে কোন নিয়োগ নেই। যে কারণে গরীব ও অসহায় রোগীরা কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। 

এদিকে যেসব ডাক্তার সেবা দিচ্ছে তারা ঠিকমত অফিস করেন না। তারা বাইরে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখে অধিক টাকা আয় করছে। যে কারণে গত ১৪ মার্চ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ১৪ জন চিকিৎসককে শোকজ পর্যন্ত করা হয়েছে।

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অফিস সময় হলেও ৬ উপজেলার হাসপাতালের বেশিরভাগ চিকিৎসক যথাসময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত হন না। অনেক সময় যোহরের আজান হলেই চিকিৎসকরা ক্লিনিকে নতুবা বাড়ি চলে যায়। এছাড়া হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের রাতের বেলা রাউন্ড দেবার বিধান থাকলেও মেডিসিন, সার্জারি ও হৃদরোগের চিকিৎসকরা রাউন্ড দেন না। ফলে বেশিরভাগ জটিল রোগী রেফার্ড করে ঢাকা, ফরিদপুর ও যশোরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ ৬ উপজেলায় জেলার সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষের সেবা দেবার জন্য ২১১ জন ডাক্তার থাকার কথা। সেখানে রয়েছে মাত্র ৬৩ জন ডাক্তার। শূন্য পদ রয়েছে ১৪৮ জন। ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সহকারি সার্জনের ২০টি পদে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ জন। ১৩টি পদ এখন ও শূন্য রয়েছে।

এছাড়া সিভিল সার্জন অফিসে ১ জন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ৪০ জন ডাক্তারের মধ্যে ১৭ জন কর্মরত, কালীগঞ্জ হাসপাতালে ৩১ জন ডাক্তারের মধ্যে মাত্র ৭ জন, মহেশপুর ৩৪ জন ডাক্তারের মধ্যে মাত্র ৪ জন, শৈলকুপায় ২৬ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জন, হরিণাকুন্ডুতে ৩০ জনের মধ্যে ৫ জন ও কোটচাঁদপুরে ২৬ জন ডাক্তারের মধ্যে ৮ জন কর্মরত রয়েছে। ২১১ জন ডাক্তারের কর্মস্থলে মাত্র ৬৩ জন ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় ৬ উপজেলার হাসপাতালগুলোতে।

ঝিনাইদহ জেলা হাসপাতালগুলোতে এত ডাক্তার সংকটের কারণে রোগীর সেবায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের উপর মহলের সুদৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এসব শূন্য পদের স্থলে কবে নাগাদ ডাক্তার আসবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। ছয় উপজেলার ৬টি হাসপাতালে এই কয়জন ডাক্তার রোগীদের চিকিৎসা দিতে মারাত্মক হিমশিম খাচ্ছে। সব মিলিয়ে চিকিৎসা সেবা এখন মারাত্মক হুমকির মুখে। 

এছাড়া হাসপাতালের খাবারের মান ও খুব নিম্ন মানের। ঠিকাদাররা যে চুক্তিতে খাবার দেবার কথা ও অঙ্গীকার করে খাবার সরবরাহ কাজ নেয়। তা কোন ভাবেই নিয়ম মানে না ও খাবার দেয় না। ফলে রোগীরা বেশির ভাগ সময়ে নিজেরা খাবার এনে খেয়ে থাকে।

এসব বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ রাশেদা সুলতানা জানান, আমরা একাধিক বার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে ডাক্তার সংকট ও শূন্য পদ পূরণের কথা বলেছি। কিন্তু উপরি মহল ডাক্তার দিচ্ছে না ও পদ পূরণ হয় না। কিন্তু আমরা তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছি রোগীদের সেবা দেবার জন্য।

Bootstrap Image Preview