Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাসায় অতিরিক্ত পশুপাখি পালন মানসিক রোগ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০৮:১০ PM
আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০৮:১০ PM

bdmorning Image Preview
প্রতিকী ছবি


ভদ্রলোক রোগী আনেননি। রোগী সম্পর্কে কিছু বলতে এসেছেন যদিও তিনি রিসেপশন বলেছে, তিনি নিজে রোগী। কার্ডে তার নিজের নামটি লিখিয়ে নিয়েছেন। এ রকম মাঝেমধ্যে অনেককেই করতে দেখা যায়।

রোগীকে কোনোভাবে ম্যানেজ করে আনতে পারেন না। বিরক্ত হয়ে নিজেই রোগী সেজে আসেন। তার পরিত্রাণ প্রয়োজন।

আপনার রোগীর সমস্যাটা কী? সমস্যা আমার আমার স্ত্রীর। তেমন বড় কোনো সমস্যা নয়। কিন্তু আমরা খুব বিরক্ত। উনাকে বোঝাতে পারি না, চিকিৎসার জন্য সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে আনতেও পারি না।

সাইকিয়াট্রিস্ট নাম শুনলেই তেলেবেগুনে জ্বলে যান। রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন। শ্বশুরবাড়ি জানিয়েছি। তারাও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভীষণ একরোখা। স্যার, আমরা দোযখে আছি। বলতে বলতে তিনি প্রায় কেঁদেই ফেলবেন এমন অবস্থা।

স্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে কান্নারত স্বামীকে দেখে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়। স্বামী স্ত্রীর কথা বলতে লাগলেন। ১৭টি বিড়াল ও তার ছানাপোনা আছে। ঘরে বিড়ালদের রাজত্ব। শুধু তাই নয়, বিড়ালগুলো নোংরা থাকে। ঘরের ভেতর বিড়ালের প্রস্রাব, পায়খানা ও পশমের দুর্গন্ধে বিরক্ত আমরা।

এসবের এলার্জিতে সারাক্ষণ বাচ্চাদের হাঁচি-কাশি লেগেই থাকে। শুধু তাই নয়, রাতে কোলে বিড়াল নিয়ে ঘুমান। আমি তাই বাধ্য হয়ে অন্য রুমে থাকি। তাতে তার ভ্রুক্ষেপ নেই।

তিনি আরও ভরতে শুরু করলেন শুধু বিড়াল না। খরগোশ আছে পাখিও আছে। বাসা যেন চিড়িয়াখানা। অতিরিক্ত পশুপ্রেম একধরনের মানসিক রোগ যদি তা পরিবারের বা প্রতিবেশী কারো বিরক্তের কারণ হয়ে পড়ে।

একসঙ্গে বসবাস দুরূহ হয়ে উঠে। টুকটাক মানসিক সমস্যা সবারই আছে তবে মানসিক রোগ বলে আমরা তখনই গণ্য করি এবং চিকিৎসা নিতে বলি, যখন তা কাছের মানুষ বা অন্যের জন্য চরম বিরক্তিকর হয়ে উঠে।

এমনকি একসময় একসঙ্গে বসবাস অসম্ভব হয়ে পড়ে। ভদ্রলোকের স্ত্র'র এ পশুপাখি প্রীতি নিশ্চয়ই মানসিক রোগের লক্ষণ। এর পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি আছে।

পেট এনিমেল হোর্ডিং বলে একধরনের অবসেশন আছে এতে রোগীরা এমন করেন। বিভিন্ন রকমের পশুপাখি, বিড়াল, খরগোশ ঘরে নিয়ে আসেন, রাখেন কিন্তু এসবের ঠিকমতো পরিচর্যা, পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা এগুলোও মেনে চলেন না।

ভদ্রলোক পীড়াপীড়ি করলেন যেন একটা ওষুধ দেই। প্লিজ আমি আর পারছি না, সংসার করা জীবনমরণ সমস্যা হয়ে যাচ্ছে।

ঠিক দেব, তবে উনাকে নিয়ে আসতে হবে। আর আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। মনে রাখবেন, আনএবল টু টলারেট ডিস এমবিগুয়েটি ইজ অলসো মেন্টাল ডিসওর্ডার।

তিনি হাসলেন, বললেন স্যার, ধন্যবাদ আপনার অপেক্ষায় রইলাম।

সাইকিয়াট্রিস্ট মেম্বার, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন।

Bootstrap Image Preview