Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মশারি টানানোর লাঠি নিয়ে ৭ মার্চের ভাষণে গিয়েছিলেন সিইসি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০১৯, ০৭:৪১ PM
আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯, ০৭:৪১ PM

bdmorning Image Preview


স্বাধীনতা আমরা চেয়েছিলাম উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ৭ মার্চের ভাষণে লাখ লাখ জনতার মাঝে আমরাই ছিলাম, আমিও ছিলাম। সেই ভাষণ শুনতে গিয়েছিলাম মশারি টানানোর লাঠি নিয়ে।

মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত ‘মহান স্বাধীন ও জাতীয় দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

সিইসি বলেন, আজকে বলব তাদের কথা, যাদের বয়স একাত্তর সালে ১৮-২২ ছিল। তারা স্বাধীনতাকে কীভাবে দেখেছিল। স্বাধীনতা অর্জনে কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিল। কীভাবে তাদের মধ্যে সংগ্রামী চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে, আমি আমার জীবনের কিছু কথা বলব। তার মানে এই নয়, আমি আমাকেই মহিমান্বিত করার চেষ্টায় বক্তব্য রাখছি। আসলে আমি বলতে চাচ্ছি, একাত্তরে যারা যুবক ছিল, তারা প্রত্যেকেই যারা যার নিজের জায়গা থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পথে কোনো না কোনোভাবে ভূমিকা রাখছে।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধের পটভূমির বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ৩ মার্চ একাত্তরে অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। ওইদিন ছিল ঢাকা স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলা। ইয়াহিয়ার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত দেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। আমার ওইদিন মাস্টার্সের ব্যবহারিক পরীক্ষা (ঢাবি) ছিল। আমরাও পরীক্ষা ফেলে পথে নেমে আসি।

সিইসি বলেন, ৭ মার্চে ভাষণে রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আমরা কেউ মশারি টানানোর লাঠি, কেউ বাঁশ এসব নিয়ে ছুটে যাই। সেখানে যে লাখ লাখ মানুষ ছিল, তার মধ্যে আমরাও ছিলাম। রাতে আমার এক স্যারের সঙ্গে দেখা করে বলি-বঙ্গবন্ধু তো দিকনির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন, এখন কী করব? স্যার বলেন, ঢাকা শহর কারো জন্য নিরাপদ নয়, তুমি বরং গ্রামে চলে যাও।

তিনি বলেন, আমি ফরিদপুরের এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের দিকে রওনা হই। গ্রামে পৌঁছে দেখি, সব তরুণ, যুবা, কৃষক-শ্রমিক-জনতা, সবার মধ্যেই যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি। আমরা শুধু, মনোবল সঙ্গী করে বাঁশের লাঠিকে রাইফেল ধরে নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করি। আসলে তখন দেশের সবাই একজন যোদ্ধা, এদেশের নদী-নালা, খাল-বিল, গাছ-পালাও ছিল স্বাধীনতার পক্ষে। ওরা (পাক হানাদার বাহনী) সাঁতার জানত না। ফলে নদী পার হতে পারতো না। ওরা গাছে ওঠতে পারতো না। আমাদের গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা তালগাছের ওপর বসেও তাদের আক্রমণ করতো। এভাবে পুরো মুক্তিযুদ্ধটা জনযুদ্ধে রূপান্তরিত হয়।

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে স্বাধীনতা মানে একটা নির্বাচন (৭০ সালের নির্বাচন)। ৭ মার্চে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালির মহাকাব্য, স্বাধীনতা যুদ্ধ আর ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ।

নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, স্বাধীনতা মানে কেবল একটি পতাকা নয়। স্বাধীনতা মানে শহীদদের আত্মত্যাগ, মা-বোনদের সম্ভ্রম হারানো। আর এই হারানোর বেদনাটা আমাদের লজ্জার নয় গর্বের।

Bootstrap Image Preview