Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সিসার ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি শিশুরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০১৯, ০৫:১৬ PM
আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯, ০৫:১৬ PM

bdmorning Image Preview


নিউইয়র্কে বসবাসকারী দক্ষিণ এশীয়, বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা মারাত্মক সিসার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তার মধ্যে শিশুদের জন্য এই সংকট অনেক বেশি বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষ করে দৈনন্দিন জীবনাচরণের কারণে প্রতিনিয়ত অনেকের রক্তে লেড বা সিসার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কথা বলছেন তারা। এর ফলে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতিসহ হাত পা ঝিম ঝিম করা, অবশ লাগা, বিষন্নতা, স্মৃতিশক্তি হারানো, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, মুখের স্বাদ বদলে গিয়ে ধাবত টেস্ট, রক্ত শুণ্যতা, রক্ত ভেঙ্গে গিয়ে রক্তের পরিমাণ কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।

নিউইয়র্কভিত্তিক সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান 'দ্য অপটিমিস্ট' এর আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা এসংক্রান্ত নানা তথ্য তুলে ধরেন। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ সভাপতি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ফেরদৌস খন্দকার, শিশু বিশেষজ্ঞ ফজলুল ইউসুফ ও নিউইয়র্ক সিটি স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আসা বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্ক স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞতা তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে দেখান কিভাবে দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে সিসার মাত্রা বাড়ছে। তার জন্যে খাদ্যাভ্যাস ও দৈনন্দিন জীবনাচরণকে দায়ী করেন তারা। খাবারে নিজেদের দেশ থেকে নিয়ে আসা মশলাগুড়ার কারণে নানা সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া কাজল, সুরমা, সিঁদুরের ব্যবহার, আয়ুর্বেদিক, হারবাল, টুটকা চিকিৎসা, খাবারের প্লেটের গ্লেজ থেকে সিসা ছড়াচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

ড. ফেরদৌস খন্দকার এসময় বলেন, ‘সিসা’ বা ‘লেড’ এমনই একটি পদার্থ যা মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এই ক্ষতি মারাত্মক'।

কিভাবে এটি ছড়ায় তা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন,' সিসা খাবারের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। খালি পায়ে হাঁটলে কারো শরীরে ভেতরে নিরবে ঢুকে পড়তে পারে এই ঘাতক। যেসব এলাকায় নানা ধরণের কারখানা রয়েছে, ঐসব এলাকায় উৎপাদিত পণ্যে সিসার মাত্রা বেশি থাকে।'

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, 'নিউইয়র্কে পরিবেশগত সংকট অতটা প্রকট নয়। এখানকার সমস্যা দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে নিজেদের মতো করে জীবনযাপন ও খাদ্যগ্রহণ। সিসার সংকট থেকে মুক্ত থাকতে হলে অবশ্যই সচেতন হতে হবে বলে মত দেন শিশু বিশেষজ্ঞ ফজলুল ইউসুফ। তিনি বলেন, 'সতর্ক হয়ে উদ্যোগ না নিলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি নেই।'

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বক্তারা জানান, 'স্বাভাবিকভাবে শিশুদের শরীরে সিসার পরিমাণ পাঁচ মাইক্রোগ্রামের নিচে থাকার কথা। পরিণত বয়সে রক্তে এর উপস্থিতি হওয়া উচিত দশ মাইক্রোগ্রামের নিচে। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই এই মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে'। ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, 'চিকিৎসায় হয়তো রক্তে এই ধাতবের পরিমাণ কমে, কিন্তু ব্রেন বা কোষে যে ক্ষতি হয়ে যায় তা আর ফিরে আসে না। আর সেজন্যেই এটির প্রতিরোধ খুব জরুরি।'

Bootstrap Image Preview