Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ছাত্রলীগকর্মী সজল হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে কুপিয়ে হত্যা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০১৯, ০৯:৫৯ PM
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯, ০৯:৫৯ PM

bdmorning Image Preview


নলছিটি উপজেলার আলোচিত কলেজছাত্র সজল হত্যা মামলার প্রধান আসামি নাচনমহল গ্রামের সাইফুল ইসলাম তালুকদার ওরফে কানবালা (৩৮) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন তার ভাগিনা রুম্মান।

শনিবার (২৩ মার্চ) বেলা ৩টার দিকে উপজেলা নাচনমহল ব্রিজের দক্ষিণ ঢালে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত সাইফুল ইসলাম তালুকদার ওরফে কানবালা নাচনমহল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজের ছেলে।

এ দিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, ভাগিনা রুম্মানকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ভারানী নামক এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন সাইদুল ইসলাম। পথিমধ্যে নাচনমহল বাজারের একটি ব্রিজের দক্ষিণ পাশে তার ওপর হামলা চালিয়েছে ১৫ থেকে ২০ অস্ত্রধারী। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রাখে।

মামাকে রক্ষায় অস্ত্রধারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে ভাগিনা রুম্মানকেও কুপিয়ে আহত করে তারা। এতে ঘটনাস্থলে সাইফুল ইসলামের প্রাণ গেলেও রুম্মানকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে স্থানীয়রা।

খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে নিহত সাইফুল ইসলামের লাশটি উদ্ধার করে ঝালকাঠি জেলা মর্গে পাঠিয়েছে।

এ সময় নিহতের স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোল্লারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেনকে আটক করা হয়। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে কে বা কারা জড়িত সেই বিষয়টি তাৎক্ষণিক নিশ্চিত হতে পারছে না পুলিশ।

তবে নিহতের পরিবার দাবি করছে, মোল্লারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেনের সাথে সাইফুলের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে তাকে চেয়ারম্যান ও তার ভাই মোজাম্মেল হোসেন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে খুন করেছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।

সজল হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে ছিল সাইদুল। জামিনে মুক্তি পেয়ে সে সম্প্রতি এলাকায় ফিরে আসে।

সাইদুলের বাড় বোন আকলিমা বেগম বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমার ভাই মোল্লারহাট ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেনের সঙ্গে ছিল। এ কারণেই সজল হত্যা মামলায় আসামি হয়েছে।বর্তমানে চেয়ারম্যান কবিরের সঙ্গে তার বিরোধ দেখা দেয়। কবিরের লোকজনই আমার ভাইকে হত্যা করেছে।

নিহতের বাবা আবদুল আজিজ তালুকদার মুঠোফেনে বলেন, আমার ছেলে কবির চেয়ারম্যানের লোক হিসেবে পরিচিত ছিল। কবিরের সঙ্গে থাকায় আমার ছেলে নানা সমস্যায় পড়ছিল। আমি তাকে কবিরের সঙ্গ ছাড়তে বলেছি। বর্তমানে কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার লোকজনই আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।

নলছিটি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাখায়াত হোসেন বলছেন, এই হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাছাড়া নিহত সাইদুুলের সাথে মোটরসাইকেলে থাকা আরোহী রুম্মানেরও জ্ঞান ফেরেনি। যে কারণে বিষয়টি সম্পর্কে আপাতত কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।

ওসি বলেন, নিহতের স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩ জুলাই বরিশাল বিএম কলেজের ছাত্র ও মোল্লারহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী সজল হাওলাদারকে (১৮) গুলি করে হত্যা করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। সজল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিল সাইদুল তালুকদার।

Bootstrap Image Preview