Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বলিউডের বিখ্যাত নায়িকাদের মত দেখতে কক্সবাজারের রাফিয়া, বিপদে পরিবার!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০১৯, ০৫:৫২ PM
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯, ০৫:৫২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কক্সবাজারের ঝিলংঝা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ঝিরঝিরিপাড়ার দিনমজুর আবদুল করিমের মেয়ে রাফিয়া (১০)। পরিবারের অভাবের কারণে মাত্র ১০ বছর বয়সেই সংসারের ভার কাঁধে তুলে নিয়েছে শিশুটি। স্কুলে যাওয়ার পাশাপাশি সে সৈকতের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঝিনুক বিক্রি করে। আর সেই আয় দিয়ে চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু রাফিয়ার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে ফেসবুক!

কিছুদিন যাবত ফেসবুকে ভাইরাল হয় রাফিয়ার মায়াবি হাসির ছবি। কেউ একজন রাফিয়ার সেই ছবি ফেসবুকে দেয়ায় সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী রাফিয়াকে নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে হলিউড-বলিউডের বিখ্যাত সুন্দরী নায়িকাদের। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এসব নায়িকাদের সঙ্গে রাফিয়ার ছবি দিয়ে ফেসবুকে লিখছেন, কে বেশি সুন্দর? কক্সবাজারের ঝিনুক বিক্রেতা রাফিয়া না ইন্ডিয়ার ক্যাটরিনা? অথবা কার হাসি বেশি সুন্দর ইত্যাদি।

এতেই বন্ধ হয়ে গেছে রাফিয়ার স্কুলে যাওয়া। এখন সে ঘরবন্দি।

রাফিয়ারা দুই ভাই, দুই বোন। তাদের মধ্যে রাফিয়া মেজো। বড় ভাই আবদুল্লাহ্ নবম শ্রেণিতে পড়ে। রাফিয়া কলাতলির সৈকত প্রাইমারি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। তবে আপাতত তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে।

জানা যায়, কোনো এক পর্যটক রাফিয়ার ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে দিলে সঙ্গে সঙ্গে ছবিটা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। এ কারণে রাফিয়া এখন স্কুলে যেতে পারে না। ঝিনুক নিয়ে যেতে পারে না সৈকতে। রাফিয়াকে সবাই চিনে ফেলায় তার সঙ্গে সেলফিতে মেতে ওঠে।

এতে অপহরণ অথবা অজানা কোনো এক ভয়ে দিন পার করছে রাফিয়ার পরিবার। তাই তাকে আপতত ঘরবন্দি থাকতে হচ্ছে।

রাফিয়ার মা রহিমা বেগম জানান, রাফিয়ার বাবা দীর্ঘদিন ধরে বেকার ও অসুস্থ থাকায় রাফিয়া প্রতিদিন সৈকতে ঝিনুক বিক্রি করে যা আয় করত তা দিয়ে চলত তাদের সংসার।

তবে অবুঝ মেয়ে রাফিয়া এসব কিছু মানতে রাজি নয়। সে তার বাবার চিকিৎসা ও সংসার চালাতে আবারও ঝিনুক হাতে ফিরতে চায় সৈকতে। যেতে চায় স্কুলে।

রাফিয়া জানায়, সে প্রতিদিন ঝিনুক বিক্রি করে ৪০০ থেকে ৫০০টাকা আয় করত, অভাবের সংসারের কথা মাথায় রেখে কখনও একটা টাকাও নিজে খরচ করত না। সব টাকাই মায়ের হাতে তুলে দিত। এ টাকা দিয়ে তার স্কুলের খরচ ও সংসারের খরচ চলত।

রাফিয়া বলে, ফেসবুক কি আমি বুঝি না, চিনিও না। তবে সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই আমাকে আর আমার পরিবারকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। আমি পড়তে চাই। বাবার চিকিৎসা করাতে চাই, সংসার চালাতে চাই। আর এসব করতে গেলে আমাকে আগের মত ঝিনুক বিক্রি করতে সাগরে যেতে হবে। আমি সবার সহযোগিতা চাই।

এ ব্যাপারে রাফিয়ার বাবা আবদুল্লাহ বলেন, রাফিয়ার আর সৈকতে যাওয়ার সুযোগ নেই। কেউ যদি এগিয়ে এসে তার পড়াশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করে তবে আমি তাকে স্কুলে পড়তে দেব।

Bootstrap Image Preview