পিকআপের ধাক্কায় পা হারানো স্কুলছাত্রী মোফতাহুল জান্নাত নিপার ক্ষতিপূরণসহ সাত দফা দাবিতে বেনাপোল-যশোর ও নাভারন-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
আজ শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। ক্লাসবর্জন করে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে শার্শার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘নিরাপদ সড়ক চাই, নিপার ক্ষতিপূরণ চাই’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে।
এ সময় সড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। অধিকাংশ যাত্রীদের বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে, রিকশা ও ভ্যানে চড়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলাকালীন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ দেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করেন শিক্ষকরা। এতে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, সাত দফা দাবি পূরণে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয়া হলেও দুটি গতি নিয়ন্ত্রক স্থাপন ছাড়া কোনো দাবি পূরণ হয়নি। সড়ক দুর্ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও ঘাতক পিকআপ চালককে আটক করতে পারেনি পুলিশ। অবিলম্বে ঘাতক চালককে আটক করতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের সহপাঠী নিপার চিকিৎসা খরচ বহনসহ উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। দাবি পূরণ না হলে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
গত বুধবার (২০ মার্চ) সকালে নাভারন বরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মোফতাহুল জান্নাত নিপাসহ তিন শিক্ষার্থী ভ্যানে চড়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল। বিদ্যালয়ের সামনে বেনাপোলগামী বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি পিকআপ শিক্ষার্থীদের ভ্যানে ধাক্কা দিলে তিনজন ছিটকে পড়ে যায়।
এ সময় নিপার ডান পা মারাত্মক জখম হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর নিপার ডান পা কেটে ফেলতে হয়। এছাড়া নিপার দুই হাত ও বাম পা ভেঙে গেছে। ভ্যানে থাকা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী স্মৃতি ও নবম শ্রেণির ছাত্রী রিপা গুরুতর আহত হয়। এ নিয়ে আন্দোলনে নামে তাদের সহপাঠীরা।
শার্শা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মশিউর রহমান বলেন, পা হারানো স্কুলছাত্রী নিপার ক্ষতিপূরণসহ সাত দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা বেনাপোল-যশোর ও নাভারন-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে তাদের সঙ্গে কথা বলে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয়। বর্তমানে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।