নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদ ও পার্শ্ববর্তী লিনউড মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় অর্ধশত মুসল্লি নিহত হওয়ার ঘটনার পর সপ্তাহ পার হয়ে যাচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার মসজিদ দুটি নতুন করে খোলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এদিন জুমার নামাজে হাজার হাজার মুসল্লি অংশ নেবেন বলে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানা গেছে।
আল নুর মসজিদের ইমাম জামাল ফাওদা বলেন, আমার ধারণা তিন থেকে চার হাজার মুসল্লি আগামীকাল শুক্রবার জুমায় অংশ নেবেন। তারা বিদেশ থেকে নিউজিল্যান্ডে আসছেন। মসজিদ বরাবর হ্যাগলি পার্কে এদিন জুমা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
আল নুর মসজিদে ৪২ মুসল্লিকে হত্যা করেন অস্ট্রেলিয়ার শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী জঙ্গি। প্রথম এ মসজিদটিকেই লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিল সে। এর পরে হামলকারী পার্শ্ববর্তী লিনউড মসজিদে হামলা চালায়, যাতে নিহত হন আরও আটজন।
ইমাম বলেন, মসজিদের কর্মীরা দিনরাত কাজ করে সেটিকে মেরামত করছেন। রক্তাক্ত কার্পেটগুলোও মাটিতে পুঁতে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এদিকে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত অর্ধশত মুসল্লির সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির পুলিশের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর দিয়েছে।
পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, আমি বলতে পারি, কয়েক মিনিট আগে নিহত সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। কাজেই দাফনের ব্যাপারে তাদের স্বজনদের বলা হয়েছে।
এদিকে শোক-শ্রদ্ধা আর কান্নার থমথমে পরিবেশের মধ্যেই শুরু হয়েছে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলায় নিহতদের দাফন। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পাঁচ দিন পর বুধবার নিহত স্বজনদের কবরে শুইয়ে দেয় দুঃখ ভারাক্রান্ত পরিবারগুলো।
সকালে জানাজা শেষে ক্রাইস্টচার্চের কবরস্থান ‘মেমোরিয়াল পার্ক সিমেটারি’তে অন্তত পাঁচজনকে সমাহিত করা হয়। সর্বপ্রথম সমাহিত করা হয় ১৫ বছর বয়সী সিরীয় শরণার্থী কিশোর হামজা মুস্তাফা ও তার বাবা খালেদ মুস্তাফাকে (৪৪)।
এদিকে সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী সন্ত্রাসকে আন্তর্জাতিক হুমকি অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডান।
নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অংশ হিসেবে আগামীকাল শুক্রবার ২ মিনিটের নীরবতা পালন ও একই দিন দেশটির সরকারি বেতার ও টেলিভিশনে একযোগে জুমার নামাজের আজান সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। খবর এএফপি, আলজাজিরা ও রয়টার্সের।
উল্লেখ্য, ১৫ মার্চ শুক্রবার রীতিমতো ঘোষণা দিয়ে ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা চালায় উগ্র মুসলিমবিদ্বেষী শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেনটন টেরেন্ট। এতে নিহত হন ৫০ মুসল্লি। গুরুতর আহত হন আরও ৫০ জন।