Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

গাঁজা না খেয়ে গাড়ি চালাতে পারে না সু-প্রভাতের চালক সিরাজুল!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০১৯, ০৯:১১ PM
আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯, ০৯:১১ PM

bdmorning Image Preview


রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীকে চাপা দেয়া সু-প্রভাত বাসের চালক সিরাজুল ইসলাম নিয়মিত গাঁজা সেবন করেন। গাঁজা ছাড়া তিনি গাড়ি চালতে পারেন না।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছে বাসটির চালক সিরাজুল ইসলাম (২৪)।

সিরাজুল ইসলাম জানান, আবরারকে চাপা দেওয়ার আগে শাহজাদপুরের বাঁশতলায় এক তরুণীকে চাপা দিয়ে আহত করে এসেছিল সে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক সু-প্রভাতের বাসটির চালক জানায়, পথচারী ওই তরুণীকে চাপা দিয়ে সে পালিয়ে আসে। এরপর প্রগতি সরণি রোডে জেব্রা ক্রসিংয়ে আবরারকে চাপা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।

আহত সিনথিয়া সুলতানা নামে ওই তরুণী বর্তমানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঘাতক সেই বাসটির চালক বলেন, ‘সারা রাত না ঘুমিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। না ঘুমানোর কারণে মাথা ঠিক ছিল না। প্রথমে একটি মেয়েকে গাড়ি চাপা দেই। এর থেকে বাঁচার জন্য আরো দ্রুত গাড়ি চালাতে থাকি। মনের মধ্যে ভয় কাজ করছিল। একটু দূরে আরেকজনকে (আবরার) গাড়ি চাপা দেই। গাড়ির চাকা তার মাথার উপর দিয়ে যায়।’

এদিকে মঙ্গলবার সকালে এ দুর্ঘটনায় রাতে নিহত আবরারের বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে বাসচালক ও তার সহকারী এবং মালিককে।

গুলশান থানার এসআই খোরশেদ আলম জানান, বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার নিহতের ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে রাতে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় চালক, হেলপারসহ মালিককে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য পরিদর্শক (অপারেশন) আমিনুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এদিকে আবরারের বাবার দায়েরকৃত মামলাতেও ওই তরুণীকে চাপা দেয়ার তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় সু-প্রভাতের ওই বাসচালক বেপরোয়া, তাচ্ছিল্যপূর্ণ ও দ্রুতগতিতে বাস চালিয়ে পথচারীকে জখমসহ মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়।

অন্যদিকে গ্রেফতার বাসচালক সিরাজুল ইসলামের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

গুলশান থানার ওসি (অপারেশন) আমিনুল ইসলাম বুধবার বিকাল পৌনে ৩টার পর তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে চালকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন প্রগতি সরণি এলাকায় সু-প্রভাত (ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৪১৩৫) বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহাম্মেদ চৌধুরী নিহত হন। পরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা আট দফা দাবি ঘোষণা করেন। বুধবার (২০ মার্চ) সকাল থেকেও রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যান।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বসুন্ধরা গেট এলাকার সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে সেখানে যান মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও বিইউপির উপাচার্য মেজর জেনারেল এমদাদ-উল বারী।

এ সময় মেয়র আতিকুল বলেন, ‘চালকের ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না। যে ড্রাইভার সু-প্রভাত পরিবহনের বাসটি চালাচ্ছিলেন, তার হালকা যান চলাচলের লাইসেন্স ছিল। এটি নিয়ে তিনি বাসের মতো ভারী যান চালাচ্ছিলেন। এটা কীভাবে সম্ভব! তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আইন অনুযায়ী দ্রুত তার শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’

ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সু-প্রভাত পরিবহনের সব বাসের সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।’

এরপর বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে ২৮ মার্চ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

Bootstrap Image Preview