Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নবজাতকের নাড়িভুড়ি বের করে ফেললেন ডাক্তার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০১৯, ০৭:৩৪ PM
আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯, ০৭:৩৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কুড়িগ্রামে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ নিয়ে খবর সংগ্রহ করতে গেলে হাসপাতালে বাধা সৃষ্টি করে প্রভাবশালীরা ও দালালচক্র। সাংবাদিকদের সঙ্গে চলে বাক-বিতণ্ডা।

এ ফাঁকে রোগীর স্বজনদের হাসপাতাল থেকে ইজিবাইকে জোড় করে বের করে দেয়া হয়। পরে স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, অপারেশনের সময় নবজাতককে মেরে ফেলা হয়। অপরদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশুটি প্রতিবন্ধী ছিল। তার সঠিক গ্রোথ হয়নি।

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানায়, লালমনিরহাট জেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রতিধর চৌধুরী পাড়া গ্রামের বলরাম চন্দ্র রায়ের (৪২) গর্ভবতী স্ত্রী লক্ষ্মীরানীর (২৬) পেটে ব্যথা উঠলে তাকে সোমবার রাত ১১টায় কুড়িগ্রাম শহরের বেসরকারি গ্রীন লাইফ হাসপাতালে জরুরিভাবে ভর্তি করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে অপারেশনরুমে নেয়া হয়। চল্লিশ মিনিট পর জানানো হয় সিজার হয়েছে। বাচ্চা প্রতিবন্ধী। পেছনে পা বের হয়েছে। সে বিকলাঙ্গ। তার মরদেহ কার্টুনে রাখা হয়েছে। রোগীর স্বজনরা প্যাকেট খুলে দেখেন নবজাতকের পেট কাটা। বাইরে নাড়িভুড়ি বের হয়ে আছে। হাত-পা সব ঠিক আছে। ফলে তাদের মনে সন্দেহ হয়। এ নিয়ে তারা প্রতিবাদ করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কথা কানে তোলেনি।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীরানীর দেবর প্রণব চন্দ্র রায় ওরফে পাভেল জানান, আমি বৌদিকে রাত ১১টার দিকে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাকে অপারেশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। চল্লিশ মিনিট পর আমাকে নার্স ওষুধ আনতে বলেন। আমি ওষুধ নিয়ে এসে জানতে পারি সিজার কমপ্লিট হয়েছে। বাচ্চা প্রতিবন্ধী। মারা গেছে। পরে রাত তিনটার দিকে আমি কার্টন খুলে দেখি বাচ্চার পেট কাটা নাড়িভুড়ি বের হয়ে গেছে। আমি হাত-পা দেখেছি সেগুলো ঠিক আছে।

মঙ্গলবার সকালে আমি বিষয়টি ডাক্তারকে জানালে তারা উল্টা পাল্টা উত্তর দেন। আমরা গরিব মানুষ, কিবা করতে পারি। তিনি আরও জানান, আমি চিৎকার-চেঁচামেচি করার পর। আমাকে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করতে বলা হয়। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আমাকে কথা বলতে দেয়া হয়নি। তারা আমাকে অটোতে তুলে সেই অটোতে হাসপাতালের লোক তিন কিলোমিটার পর্যন্ত সঙ্গে যায়। যাতে কারও সঙ্গে কথা বলতে না পারি। পরে তারা ত্রিমোহণী থেকে ফিরে আসে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।

লক্ষ্মীরানীর স্বামী বলরাম চন্দ্র রায় জানান, আমি তিন বছর হয় বিয়ে করেছি। এটা আমাদের প্রথম সন্তান ছিল। ঢাকার মাওনা চৌরাস্তায় একটি বাটন ফ্যাক্টরিতে চাকরি করি। ছুটি না পাওয়ায় ছোট ভাইকে দিয়ে স্ত্রীকে পরিচিত ডাক্তারের মাধ্যমে সেখানে ভর্তি করি। আমাকে রাত ১২টায় প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম হয়েছে বলে জানানো হলেও পরে জানতে পারি আমার সন্তান মারা গেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা আলট্রাসনোগ্রাম করেছি। কিন্তু কেউ বলেনি বাচ্চা বা বাচ্চার মায়ের কোনো সমস্যা রয়েছে।

এ ব্যাপারে গ্রীন লাইফ হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. অমিত কুমার রায় নিজে সিজার করার বিষয়টি স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জানান, বাচ্চাটির এবডোমিনাল ওয়াল তৈরি হয়নি। যাকে চিকিৎসার ভাষায় ওম ভেলোসিল বলা হয়। তার পেটের নাড়িভুড়ি সঠিক পরিপক্কতা না আসায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম জানান, আমি এই মাত্র বিষয়টি জানলাম। এ ব্যাপারে আমাকে কেউ অবগত করেনি বা কোনো ধরনের অভিযোগ নিয়ে আসেনি।

Bootstrap Image Preview