মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে আবারও ব্যাপকভাবে ধরপাকড় শুরু করেছে দেশটির রয়্যাল পুলিশ ও অভিবাসন বিভাগ। গত এক সপ্তাহে ‘ফ্রি ভিসার শ্রমিকসহ অন্তত ৮৮০ অবৈধ শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। বিপুল সংখ্যক বিদেশি এসব নাগরিকদের মধ্যে ঠিক কত সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ওমানে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মাস্কাটসহ ওমানের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব নাগরিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ১০ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত ছয়দিনের এই গ্রেপ্তার অভিযানে ৮৮০ জন শ্রমিক গ্রেফতারের খবর জানিয়েছে টাইমস অব ওমান।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৪৪০ ফ্রি ভিসার (ফ্রিল্যান্স কাজ), স্পন্সরদের থেকে পালিয়ে কাজ করার অপরাধে ৩০৬ জন এবং যথাযথ বৈধ কাগজপত্র না দেখাতে পারায় ১৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রয়্যাল ওমান পুলিশ ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। মূলত শ্রম বাজারকে পরিষ্কার করার জন্য এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।’
গ্রেফতার হওয়া এসব অবৈধ নাগরিকদের সম্পর্কে মন্তব্য করে মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এত সংখ্যক শ্রমিক গ্রেফতার হওয়ার পরও এখনও বহু শ্রমিক যথাযথ কাজের অনুমতি ছাড়াই চাকরি করছে।’
শ্রম আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘একজন প্রবাসী শ্রমিক অথবা কর্মচারী যিনি ওমানের পরিচালক সম্পর্কিত কোনো লাইসেন্স ছাড়াই কাজ করেন অথবা নিয়োগকর্তা ব্যতীত লাইসেন্স পাওয়ার জন্য অন্য কোনো নিয়োগকর্তার সঙ্গে কাজ করেন, তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
অর্থাৎ কেউ যদি কোনো বিদেশি কর্মী ওমানিদের সঙ্গে চুক্তি করে ফ্রি ভিসার কথা বলে শ্রমিককে ওমানে নিয়ে আসে এবং অন্য কোথাও কাজ করায়, তাহলে এর জন্য ওই ব্যক্তিকে এক মাসেরও অধিক কারাদণ্ড এবং এক হাজার ওমানি রিয়েল জরিমানা করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কোম্পানি বা ব্যক্তি যারা অবৈধভাবে শ্রমিকদের ওমানে নিয়ে আসে বা চাকরি প্রদান করে, তাদেরকে বিদ্যমান আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, মরুর দেশ ওমানে বর্তমানে নয় লাখ বাংলাদেশি আছেন। কাজের সন্ধানে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ থেকে আরও বহু শ্রমিক প্রবেশ করছেন। এদের মধ্যে বড় একটি অংশ দালালের মাধ্যমে ফ্রি ভিসা নিয়ে এদেশে আসছেন। ফ্রি ভিসায় আসা নাগরিকদের ওমান থেকে বের করে দেওয়ার জন্য দেশটির পুলিশ ও অভিবাসন বিভাগ যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করছে। পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হওয়ার বড় একটি অংশই থাকে বাংলাদেশি শ্রমিক।