সু-প্রভাত বাসের চাপায় নিহত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন করেছিলেন। তার ফেসবুক প্রোফাইলে ঢুকে এ-সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া গেছে। অথচ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এই সড়ক দুর্ঘটনায়ই তার মৃত্যু হলো।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা গেট এলাকায় সু-প্রভাত বাসের চাপায় মারা যান আবরার আহমেদ চৌধুরী।
আবরারের ফেসবুক প্রোফাইলে ঢুকে দেয়া যায়, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন চলাকালে তিনি আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে তার ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করেন। ছবির নিচে লেখা ‘নিরাপদ সড়ক চাই’। ২ আগস্ট ছবিটি পোস্ট দেন আবরার।
২০১৮-র নিরাপদ সড়ক আন্দোলন বাংলাদেশে কার্যকর সড়ক নিরাপত্তার দাবিতে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট ২০১৮ পর্যন্ত সংঘটিত একটি আন্দোলন।
ঢাকায় ২৯ জুলাই সংঘটিত এক সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ পরবর্তীতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে।
৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রীসভা একটি খসড়া ট্রাফিক আইন অনুমোদন করে, যে আইনে ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যায় মৃত্যদণ্ড এবং বেপরোয়াভাবে চালিয়ে কারো মৃত্যু ঘটালে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়; যদিও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বেপরোয়া চালনায় মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছিল। ৮ আগস্টের মধ্যে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।
এদিকে, ছাত্র নিহতের ঘটনায় কুড়িল বিশ্বরোডের নর্দা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা এ সময় সুপ্রভাত পরিবহনের সব বাস আটক করে রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করতে থাকে। ফলে বসুন্ধরা গেট এলাকা থেকে রামপুরা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়ক ছাড়েননি।
এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামী লোকজনসহ ও বাসযাত্রীরা। এ সময় তাদেরকে পায়ে হেটে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ছাত্রদের শান্ত করার চেষ্টা করে।
ঘটনাস্থলে আসা গুলশান থানার এসআই মোশাররফ হোসেন জানান, ঘাতক বাসটি আটক করে থানায় পাঠানো হয়েছে। চালক ও হেলপারকে আটক করতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।