Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

অস্ট্রেলিয়ার এমপির মাথায় ডিম ভাঙা নিয়ে মুখ খুললো সেই কিশোর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০১৯, ০৯:৪০ PM
আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯, ০৯:৪০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ভেঙে ওই কিশোর এখন রীতিমতো তারকা। ওই কিশোরের নাম উইল কনোলি। তার বয়স ১৭ বছর। কনোলি অস্ট্রেলিয়ারই বাসিন্দা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে উপাধি দেওয়া হয়েছে ‘এগ বয়’ বা ‘ডিম বয়’ নামে।

শনিবার এক অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ভাঙে উইল কনোলি। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে অস্ট্রেলীয় খ্রিস্টান শ্বেতাঙ্গ জঙ্গি হামলার ঘটনার পর মুসলমানদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিং। এর পরই তিনি তোপের মুখে পড়েন। এরই প্রতিক্রিয়ায় ওই কাণ্ডটি ঘটান কিশোর কনোলি। ঘটনার পর এক টুইট বার্তায় কনোলি জানান, কেন তিনি ওই ঘটনা ঘটান।

টুইটে কনোলি লিখেছে, ‘ওই মুহূর্তে মানুষ হিসেবে আমি গর্বিত। আপনাদের বলতে চাই, মুসলমানরা সন্ত্রাসী নয় এবং সন্ত্রাসবাদের কোনো ধর্ম নেই। যারা মুসলমানদের সন্ত্রাসী সম্প্রদায় মনে করে, তাদের মাথা অ্যানিংয়ের মতোই শূন্য।’

গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে অস্ট্রেলীয় খ্রিস্টান শ্বেতাঙ্গ জঙ্গি ব্রেন্টন ট্যারান্টের হামলায় ৫০ জন নিহত হন। এরপরই অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিং মুসলিমদের অভিবাসন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে নামাজ আদায়ের কথা ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। গোলাগুলির শব্দ পেয়ে দ্রুত হোটেলে ফিরে যান তারা।

ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার পর মুসলমানদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিং। টুইট বার্তায় ওই সিনেটর বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের রাস্তায় ওই ঘটনার প্রকৃত কারণ হচ্ছে অভিবাসন কর্মসূচি, যা উগ্র মুসলিমদের নিউজিল্যান্ডে থাকার অনুমোদন দিচ্ছে।’

এদিকে ডিম ভাঙার ঘটনার পরেই ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে কনোলির অনুসারীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় ইনস্টাগ্রামে তার অনুসারী ছিল তিন লাখ ৩০ হাজারের মতো।

রবিবার কনোলি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে। ওই ভিডিও বার্তায় সে হাসতে হাসতে বলে, ‘কখনো রাজনীতিবিদদের মাথায় ডিম ভাঙবেন না। ডিম ভাঙলেই ৩০ জন বোগোন্সকে (নিম্ন শ্রেণির ব্যক্তি) মোকাবিলা করতে হবে আপনাকে। আমার কঠিন শিক্ষা হয়ে গেছে।’

কনোলি আসলে ৩০ জন ব্যক্তি বলতে সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিংয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের বোঝাতে চেয়েছে। তবে কনোলি তাদের একটু ব্যঙ্গাত্মকভাবে সম্বোধন করেছে; বলেছে ‘নিম্ন শ্রেণির লোক’।

পরে কনোলি তার অনুসারীদের উদ্দেশে লেখে, ‘আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাই।’

শনিবার এক ভিডিওতে দেখা যায়, সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। হঠাৎ করেই সিনেটরের পেছনে থাকা কিশোর কনোলি তার হাতে থাকা একটি ডিম ফ্রেজারের মাথায় ভেঙে দেয়। অন্য হাত দিয়ে মোবাইল ফোনে এই ঘটনা ভিডিও করছিল সে নিজেই। সিনেটর ফ্রেজার ঘুরে গিয়ে কনোলিকে চড় মারেন। মারধরের সময়ও কনোলি তা মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিল।

কনোলিকে সমর্থন জানাতে এবং আরো ডিম কিনতে ‘গো ফান্ড মি’তে তহবিল গঠন করা হয়েছে। তহবিলের লক্ষ্য দুই হাজার ডলার থাকলেও এরই মধ্যে ওই তহবিলে ৩০ হাজার ডলার জমা পড়েছে। ঘটনার পরই কনোলিকে আটক করে নিরাপত্তী কর্মীরা। পরে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম নেল সেভেনে প্রচারিত এই ভিডিও ৫০ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। সাধারণ জনগণ তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। অনেক তাকে অস্ট্রেলিয়ার সেরা নায়ক বলে মন্তুব্য করেছে| ইনস্টাগ্রামে একজন মন্তুব্য করেন, ‘আপনি একটি দেবদূত’। কেউ লিখেন, ‘পরম কিংবদন্তি’। কেউ লিখেন, ‘আপনার মতো আরো প্রয়োজন।’

Bootstrap Image Preview