Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০১৯, ০৫:৫৫ PM
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯, ০৫:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


দেশের একমাত্র দ্বীপজেলা ভোলায় চলতি মৌসূমে তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার ৭ উপজেলায় আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৪শ’ ৯১ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৩ গুণেরও বেশি। এবার আবাদ টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ১৬০ হেক্টর।

এছাড়া হেক্টর প্রতি তরমুজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ মেট্রিক টন করে। আর মোট তরমুজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ২৪ হাজার ৫শ’ ৫০ মেট্রিক টন।

এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় অথবা শিলা বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠে তরমুজের অবস্থা বেশ ভালো রয়েছে। জমিতে শোভা পাচ্ছে সবুজ দৃষ্টিনন্দন তরমুজ। শেষ পর্যন্ত যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তবে অবশ্যই এ অঞ্চলে তরমুজের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষি বিভাগ জানায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, তরমুজে সাধারণত ধানের চেয়ে ৪ থেকে ৫ গুণ লাভ বেশি হয়। এজন্য অনেক কৃষক তরমুজ আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কোন কোন কৃষক তরমুজ বিক্রিও শুরু করেছেন। প্রথম দিকে তারা বেশ ভালো দাম পাচ্ছেন। পাতার ও ফলের রোগ সমাধানে কৃষি কর্মকর্তারা সব ধরনের পরামর্শ সেবা দিয়ে আসছেন কৃষকদের। যদি আর ১৫ থেকে ২০ দিন আবাহওয়া সহায় থাকে তবে তরমুজের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এখানে তরমুজ আবাদ শুরু করা হয়। অনেকে তারও আগে আগাম আবাদ করেছে। মূলত তরমুজ ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ঘরে তোলেন কৃষকরা। বর্তমানে আগাম আবাদ করা তরমুজ বাজারে রয়েছে। এছাড়া অন্যগুলোরও কর্তনের প্রস্তুতি চলছে। কেউ কেউ আবার বাজারেও তুলেছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, এ জেলায় সাধারণত ব্লাক বেরি, সুপার এমপিআর, পাকিজা, ব্লাক ডায়মন্ড, ট্রাফিক্যল ড্রাগন, সুইট জায়েন্ট, ড্রাগন, সুলতান, আনার কলি, বিগ ফ্যামিলি জাতের তরমুজ আবাদ বেশি করা হয়। পাশাপাশি এবারই নতুন উন্নত জাত হানি কুইন ও লেন ফাই জাতের আবাদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, হলুদ রঙ্গা এ তরমুজ অত্যন্ত সুমিষ্ট হওয়ায় কেজি হিসেবে এ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। একেকটি তরমুজ ৫ থেকে-৬ কেজি ওজনের হয়। প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে কর্তমানে বিক্রি হচ্ছে।

তরমুজ চাষিরা জানান, গত বছর মৌসুমের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তরমুজের ফলন আশানুরূপ হয়নি। ফলে অনেক কৃষককে গুনতে হয়েছে লোকসান। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেশি তরমুজের আবাদ হয়েছে। তাই আশা করা যাচ্ছে লোকসান পুষিয়ে লাভবান হবেন কৃষকরা।

ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান ও কবির হোসেন জানান, তারা প্রায় দেড় একর জমিতে এবছর তরমুজের আবাদ করেছেন। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা তাদের সব ধরনের সেবা দিয়ে আসছেন। আগামী ৮-৯ দিনের মধ্যে তারা প্রথম পর্বের তরমুজ বিক্রি শুরু করবেন।

ধনীয়া ইউনিয়নের তরমুজ চাষি লিয়াকত আলী, আজগর আলী, সুবেদ মিয়া, রহমত মাঝি ও আজাহার হাওলাদার বলেন, তারা প্রত্যেক বছরই তরমুজ আবাদ করে থাকেন। তরমুজ মাঠে প্রথম দিকে ভালো থাকে। কিন্তু শেষ সময়টাতে ভয় বেশি থাকে। কারণ শিলা বৃষ্টি ও অতি বৃষ্টি এর প্রধান শত্রু। যদি এ সময়টাতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হয় তবে তারা লাভবান হবেন।

কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, অতি বৃষ্টির চেয়ে তরমুজের বেশি ক্ষতি হয় শিলা বৃষ্টিতে। তাই শিলা বৃষ্টিতে তরমুজের ক্ষেতের উপর পলিথিন দিয়ে ডেকে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া অতি বৃষ্টিতে পানি জমে যাতে গাছের গোড়া পচঁতে না পাড়ে সে জন্য বিশেষ স্প্রে’র কথা বলেন জেলা কৃষি বিভাগের প্রধান এ কর্মকর্তা।

Bootstrap Image Preview