পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থীরাও প্রতীক পেয়ে আট-ঘাট বেধে নেমেছেন প্রচার-প্রচারণায়। বিভিন্ন বাজারের অলি-গলি থেকে গ্রামের পাড়া মহল্লায় সাঁটানো হয়েছে ব্যানার পোষ্টার। প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা মাইকিং করে সরগরম করে তুলছেন নির্বাচনী এলাকা।
তবে দীর্ঘ ১০ বছর পর অনুষ্ঠিত বহুল প্রতীক্ষার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন আগ্রহ নেই। পুরো উপজেলা জুরে ব্যানার পোস্টারের আধিপত্য থাকলেও চায়ের কাপে ঝড় তুলতে পারেনি এই নির্বাচন। সাধারণ মানুষ বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ কম। তার উপর আবার বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এসব কারণে নির্বাচন নিয়ে উপজেলায় তেমন কোনো আলোচনা নেই।
ঘিলাছড়ার ইউনিয়নের যুধিষ্ঠিপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী লুৎফুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেই হিসেবে মানুষের মধ্যে যেমন আগ্রহ থাকার কথা, তার বিন্দুমাত্রও নেই। তবে এলাকাজুড়ে প্রার্থীরা পোষ্টার লাগিয়ে গেছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রার্থীরা আসছেন। দোয়া নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা সবে মাত্র শুরু হলো। বেশিরভাগ ভোটাররা এখনো নীরব রয়েছেন। বাজারে নির্বাচনী কোন আমেজ বা আলোচনা নেই। এছাড়া নির্বাচনের এখনো অনেকদিন বাকী। শেষ দিকে হয়তো প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি মানুষও নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী হবে।
পশ্চিম মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজিব আহমদ বলেন, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর ভোটের আমেজ অনেকটাই কমে গেছে। সেজন্য দীর্ঘ দিন পর ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও মানুষের মধ্যে কোন আগ্রহ নেই। এছাড়া বিএনপি নির্বাচনে না আসাটাও একটা বড় ফ্যাক্টর।
দক্ষিণ ফেঞ্চুগঞ্জ (মাইজগাঁও) বাজারে চা বিক্রেতা ছানা মিয়া বলেন, নির্বাচনের সময় বাজারে যেভাবে মানুষের জনসমাগম ঘটে। এবার এখনো তার দেখা মেলেনি। আর প্রার্থী নিয়ে ভোটারদের তেমন আলোচনাও নেই।
প্রসঙ্গত, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে ৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৬ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ৪ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৮ মার্চ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারকালে ২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার মানিককোনা গ্রামের আবদুস সালাম নামের এক ব্যক্তি উচ্চ আদালতে গেজেটে ত্রুটির কারণ দেখিয়ে একটি রিট পিটিশন করেন। রিট আবেদনের শুনানি শেষে উচ্চ আদালত ওই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল স্থগিত ঘোষণা করেন।
এর আগে, ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি সর্বশেষ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সাইফুল্লাহ আল হোসাইন।