Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

১০ বছর যাবৎ বিনা বেতনে শিক্ষকদের মানবেতর জীবন যাপন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০১:৫৭ PM
আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০১:৫৭ PM

bdmorning Image Preview


নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার কোলা ইউপির আদিত্যপুর গ্রামে আবু তাসির বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ২০১০ইং সালে স্থাপিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাম্য দরিদ্র বালক-বালিকাদের মাঝে শিক্ষা প্রসারে কাজ করে চলেছে ৪ জন শিক্ষক।

এলাকাতে শিক্ষা সম্প্রসারণের চিন্তা থেকে স্কুলের সভাপতি ফরিদা খানম স্কুল স্থাপনের জন্য ৩৩ শতক জমি দান করেন। তার স্বামী আবুতাসির এর নাম অনুসারে বিদ্যালয়টির নাম করণ করা হয়। বর্তমানে ১৫৫ জন শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষাগ্রহণ করছে। বিনা পারিশ্রমিকে ১০ বছর ধরে শিক্ষাদানে নিয়োজিত রয়েছেন প্রধান শিক্ষক পাড়োরা গ্রামের মো. শামীম হোসেন, মোসা. শারমীন সুলতানা, আদিত্যপুর গ্রামের রহিমা খাতুন (বকুল), ভাণ্ডারপুর গ্রামের চম্পা রানী।

শিক্ষকরা জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে কোনো বেতন ভাতা বা কোনো সরকারি সুবিধা না পাওয়ায় আমরা অতিকষ্টে মানবেতর দিন যাপন করছি।

২০১১ ইং সাল হতে স্কুলটির শিক্ষার্থীরা নিয়মিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে অংশগ্রহণ করে আসছে। বিদ্যালয়ের পাসের হার শতভাগ। ২০১২ সালে শিক্ষা সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়েছে একজন, ২০১৩ সালে দুইজন, ২০১৫ সালে শিক্ষা সমাপনীতে ঐ বিদ্যালয় হতে ২৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে যার মধ্যে চারজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ২০১৬ সালে ২৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে চারজন। যা উপজেলার কিছু কিছু সরকারি বিদ্যালয়ে সম্ভব হয়নি।

প্রধান শিক্ষক মো. শামীম হোসেন বলেন, নতুন যে সব স্কুল সরকারিকরণ হয়েছে তাদের থেকে আমার স্কুল শতভাগ পাস রয়েছে। ২০১১ সালে ১৯ জুলাই শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রতিষ্ঠানটির উপস্থাপন ও অনুমতির জন্য স্কুলের তথ্যাদি জমা দেওয়া হয়। যা শিক্ষা অধিদপ্তরের ৩৫তম সভায় উপস্থাপিত হয়েছে। বর্ষার সময় আকাশে মেঘ দেখা দিলেই স্কুল ছুটি দিতে হয়। শীতের সময় কোমলমতি শিক্ষাথীসহ শিক্ষক-শিক্ষিকা অতিকষ্টে পাঠদান করান।

আদিত্যপুর গ্রামের আবু রাইহান আলম, এরশাদ আলী, মো. আজিজার রহমান, আব্দুল রাজ্জাক, মাসুদ রানাসহ অনেকে জানান, পাড়োয়ারা গ্রামের মৃত আবু তাছির নামে স্কুল নাম করণীয় করার জন্য তার স্ত্রী ফরিদা বেগম অদিত্যপুর গ্রামে ৩৩ শতক জমি ও তিন লাখ টাকা স্কুলের নামে লিখে দেন। স্থানীয় গ্রামবাসীর উদ্যোগে টিন দিয়ে তৈরি করা বিদ্যালয়ের বর্তমানে বেহাল দশা। বর্তমানে শীত ও ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে এই টিনের ঘরে অতিকষ্টকর হয়ে পড়েছে।

২০১৩ সালে বিদ্যালয়ের জন্য স্যানিটারি ল্যাট্রিন ও টিউবয়েল প্রদান করেন রোটারি ইন্টারন্যাশনাল। বর্তমানে হাড় কাপানো শীতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অতিকষ্টে আর বৃষ্টিতে হলে কাকভেজা হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নেই বসার মতো বেঞ্চ, ব্লাকবোর্ড, শিক্ষা উপকরণ। প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং সমাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলা প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করার জন্য এলাকাবাসী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Bootstrap Image Preview