সৌদি আরবে নারীদের সঙ্গে দাসীর মত আচরণ করা হয়। সেখানে তাদের কোন স্বাধীনতা নেই। নারীরা সেখানে পুরুষদের ভোগের বস্তু বলে জানিয়েছেন সৌদি থেকে পালানো দুই ইসলামত্যাগী বোন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওই দুই বোন সৌদি থেকে পরিবারের সঙ্গে শ্রীলংকায় ছুটি কাটাতে যায়। সে সময় তারা শ্রীলংকা থেকে হংকংয়ে পালিয়ে আসে এবং অস্ট্রেলিয়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
কিন্তু তার আগেই হংকং বিমানবন্দরে সৌদি প্রশাসনের দুই ব্যক্তি তাদের আটকে দেন, এবং তাদের জোর করে সৌদি আরবের ফ্লাইটে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে কোনোভাবে হংকংয়ে দর্শণার্থী হিসাবে ঢুকতে সক্ষম হন দুই বোন।
হংকংয়ে তারা নিরাপত্তার অভাবে লুকিয়ে বসবাস করছিলেন।
ওই দুই তরুণী এক বিবৃতিতে জানা যায়, তারা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন এবং তাদের সৌদিতে নিয়ে গেলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। ওই দুই সৌদি তরুণীর একজনের বয়স ২০ আরেক জনের বয়স ১৮। তারা একে অপরের বোন।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা সিএনএনকে ওই দুই বোন জানিয়েছেন, তারা জন্মের পর থেকে ইসলাম ধর্মের কারণে নানা বাধার মধ্যে জীবন অতিবাহিত করেছেন এবং শারীরিক ভাবে চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সৌদিতে নারীদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সে কারণে তারা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছে বলে জানান।
পরিবার থেকে পালানোর কারণ হিসেবে দুই বোন জানিয়েছেন, আমরা আমাদের পরিবারের কাছে অনেক ভাল মেয়ে হিসেবে ছিলাম। কেননা পরিবারের সব কথা আমাদের মেনে চলতে হতো। তারা ঘর পরিষ্কার করতে বলে তাই করতাম, মোট কথা যা আমাদের নির্দেশ করা হত তাই করতাম।
পরিবার থেকে পালানোর বিষয় সম্পর্কে ওই দুই বোন জানান, আমরা প্রায় দুই বছর থেকে গোপনে পালানোর পরিকল্পনা করি। বর্তমানে ওই দুই বোন হংকংয়ে আছেন। তারা হং কংয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি থাকতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে সৌদি আরব থেকে নারীদের বাড়ি ছেড়ে পালনোর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা যায়, দেশটিতে মোহাম্মদ বিন সালমান যুবরাজ হিসেবে ক্ষমতার গদিতে বসার পর থেকে নারীদের সৌদি থেকে পালানোর হার তুলনামূলক বেশি।
সৌদি আরবের অভিভাকত্ব আইন অনুযায়ী বাবার অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরেও যেতে পারে না মেয়েরা। বাবার আদেশ না মানলে যেতে হয় জেলে। এছাড়া সৌদি আরবে ধর্মত্যাগের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।