Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অগ্নিকাণ্ডের পরে যেসব বিপর্যয়ে পড়েছে চকবাজারবাসী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:০৭ PM
আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:২৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


রাজধানীর পুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চকবাজারের নিরাপত্তাজনিত কারণে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। চকবাজারের চুড়িহাট্টাসহ আশেপাশের এলাকায় পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে আশেপাশের এলাকার মানুষ।

অগ্নিকাণ্ডের পরদিন গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে চকবাজারসহ আশেপাশের এলাকায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার বলেন, যে কোনও অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর আশপাশের গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়। এটা আমাদের দুর্ঘটনা পরবর্তী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোনও অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর আগুনের ছোটখাট স্ফুলিঙ্গ থেকে যেতে পারে। সেটা থেকে আবারও আগুন লেগে যেতে পারে। আর এটা যেহেতু বড় আগুন তাই অতিরিক্ত নিরাপত্তা হিসাবে বেশ কিছুদিন গ্যাস ও পানির সংযোগ বন্ধ থাকবে।

আজ শুক্রবার সকাল থেকে সরেজমিনে চকবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রাইভেটকার, রিকশা, ঠেলাগাড়ি ও মোটরসাইকেলের কাঠামো আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এলোমেলো পড়ে আছে বডি স্প্রে, প্লাস্টিকের পোড়া বর্জ্য। আশপাশের বাড়ির ক্ষতবিক্ষত পোড়া দেয়াল থেকে খসে পড়েছে ইট-সুরকি আর টাইলস। খাবার হোটেলের তেলতেলে কড়াইয়ে অর্ধসিদ্ধ রুটি। এমন নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ বলছে কী মর্মন্তুদ ঘটনা ঘটেছে। ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে তছনছ হয়ে গেছে একটি জনাকীর্ণ ও কোলাহলপূর্ণ জনপদ।

চকবাজারের পাশের এলাকার বাসিন্দা ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, এখানে অগ্নিকাণ্ডের এতো বড় ঘটনা ঘটেছে। সেটার একটা ট্রমা তো আছেই। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ নেই। খাবার পানি ও রান্না খাবারের কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই দিন দশেকের জন্য বাচ্চাদের স্কুল বাদ দিয়ে অন্য এলাকায় আত্মীয়দের বাসায় রেখে এসেছি। কারণ এই দুর্বিষহ পরিবেশ এখন বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর। মানুষের কান্নার আহাজারিতে বাচ্চারা নানান প্রশ্ন করে। বাচ্চাদের কি বলবো?

চকবাজারের গ্যাস-সংকট নিয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (অপারেশন বিভাগ) ডিরেক্টর কামরুজ্জামান খান বলেন, চকবাজারের আশেপাশের এলাকার গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। এটা বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করছে কবে থেকে আবার গ্যাস সংযোগ খুলে দেওয়া হবে।

এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি আবাসিক গ্রাহকদের। আশেপাশের হোটেল থেকেও খাবার আনা সম্ভব হচ্ছে না। কোন ব্যবস্থা না থাকার কারণে মানুষ এলাকা ছাড়ছে। যতোদিন না গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ এর সমস্যা শেষ না হচ্ছে। ততোদিন এলাকার মানুষের বসবাস করা কঠিন বলে মন্তব্য এলকাবাসীর।

ওয়াহেদ ম্যানশনের পাশের বাড়ির বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, আমার বাড়ি পাশে হওয়ার কারণে আগুন নেভাতে আমার বাড়ি থেকে পানি নেওয়া হয়েছে। তার পর থেকে আমার বাড়িতে পানি নেই। আমার বাড়ির লোকজন সবাই ঘটনার দিন থেকে বাড়ির বাইরে। আর এখানকার পরিবেশের যে অবস্থা মানসিকভাবে ভালো থাকা মুশকিল। পরিবেশ ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে লোক আসতে নিষেধ করবো।

বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০০ কর্মী। তবে ছোট গলি ও পানির স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়। অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৬৭ জন প্রাণ হারায়।

Bootstrap Image Preview