আজ সকাল থেকেই ঢামেক হাসপাতালের মর্গের সামনে এমন অসংখ্য মানুষের স্বজনদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। কেউ ভাই খুঁজছেন, কেউ খুঁজছেন বাবা আবার কেউ খুঁজছেন প্রিয় মায়ের মুখ। তাদেরই একজন ইসমাইল হোসেন। যিনি খুজছেন ভাই-ভাবি ও তাদের আট বছরের সন্তান আফতাহীকে।
সকাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গের সামনে ভাই, ভাবী আর ভাতিজার খোঁজে দাঁড়িয়ে আছেন লিপুর ভাই ইসমাইল হোসেন।
জানা যায়, ছেলে আফতাহীকে (৮) নিয়ে অফিস শেষে এক রিকশায় বাসায় ফিরছিলেন সালেহ মোহাম্মদ লিপু আর স্ত্রী নাসরিন আক্তার । সর্বশেষ বাসা থেকে তিন মিনিট দূরত্বে আটকে ছিলেন যানজটে। এরপর আর খোঁজ মেলেনি তাদের। পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে ডান পাশের রাস্তায় ছিল সর্বশেষ অবস্থান মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে।
আট বছরের ভাতিজা আফতাহী পড়তেন বকশীবাজারের বীকন স্কুলে। সেও ছিল ওই রিকশায়। তিন মিনিট দূরেই ছিল বাসা। প্রতিদিনের মতো সেদিন রাতেও বাসায় ফিরছিলেন তারা।
রাতের খাবার একসঙ্গে খেয়ে বাসায় যেতেন সব সময়। ধারণা করা হচ্ছে আগুনে পুড়েছেন তিন জন। কোথাও তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সর্বশেষ সিআইডির নমুনা সংগ্রহ টিমের কাছে রক্ত ও লালার স্যাম্পল দিয়ে রাখছেন তারা।
শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে ডিএনএ’র নমুনা দিয়ে আহাজারি করছিলেন নাসরিন আক্তারের ভাই আনোয়ার হোসেন রনি।
লিপুর ভাই ইসমাইল বলেন, জানি না ভাই-ভাবি-ভাতিজা কোথায় আছেন। আগুনের পরে মোবাইলে কল দিয়েছি, বন্ধ দেখাচ্ছে। আমার ভাতিজাও ছিল এক রিকশায়। জানি তাদের আর ফিরে পাবো না। কিন্তু শেষবারের মতো দেহটাও পেলে নিজেদের সান্ত্বনা দিতে পারতাম। সবাই বলছে কেউ বেঁচে নেই মর্গে গিয়ে সবগুলো মরদেহ দেখেছি কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেকের চেহারা জ্বলে যাওয়ায় মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডাক্তার সোহেল মাহমুদ বলেন, এই আগুনে অনেকের চেহারা পুরোপুরি অস্বাভাবিক আকৃতি ধারণ করেছে। এতে কে কার স্বজন তা তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের পক্ষে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। ডিএনএ ম্যাচিংয়ের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।