জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী, বিশেষ কিছু পরিস্থিতি ছাড়া শুধু সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা ওড়ানো যাবে। কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায় তার বিপরীত চিত্র। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ওড়ানো অর্ধনমিত লাল সবুজের জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা মাঝ রাতেও উড়তে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে।
বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মাঝ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, কাজী নজরুল ইসলাম হল এবং শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে উড়তে দেখা যায় অর্ধনমিত লাল সবুজের জাতীয় পতাকা। সাথে ওড়াতে দেখা গেছে শোক দিবসের কালো পতাকা।
প্রত্যক্ষদশী শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাতে জাতীয় পতাকা ওড়ানো একটি অন্যায় ও রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বকর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় এমন ঘটনা দুঃখজনক। জাতীয় পতাকা একটি শ্রদ্ধার বিষয়। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে প্রশাসনের আরও সচেতন হওয়া উচিত।’
অপরদিকে মহান শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে উড়ানো জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকলেও সেখানে কালো পতাকা লাগানো হয়নি এবং অর্ধনমিত জাতীয় পতাকার দুই পাশে ওড়ানো ছিল ছাত্রলীগের দলীয় পতাকাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী বলেন, ‘শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা টানানোর পর থেকে কখনও নামানো হয়েছে কিনা বলে দেখা যায়নি। প্রতি রাতেই কার্যালয়ে উড়ে এ জাতীয় পতাকা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এ কার্যালয়ের কোন অনুমোদন দেওয়া হয়নি।’
কিন্তু এ ক্ষেত্রে আরো দুটি বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী, শহীদ দিবস ও জাতীয় শোক দিবস ছাড়া সাধারণ কার্যদিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান নেই। কিন্তু মহান শহীদ দিবস শেষ হওয়ার পরও মাঝ রাতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয়েছে এবং সাথে উড়ানো রয়েছে কালো পতাকা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কার্যালয় এখনো প্রশাসন থেকে ঘোষণা হয়নি উল্লেখ করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘পতাকা উড়ানোর বিধিমালা আমার জানা নেই। আর যদি উড়েও থাকে তাহলে এটি অসচেতনতা ও দায়িত্বহীনতার অভাব।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরকে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।