Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিচারকদের প্রতি বাংলায় রায় লেখার অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৩৬ PM
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৩৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


স্বল্পশিক্ষিত সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে মামলার রায় বাংলায় লেখার জন্য বিচারকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বৃহস্পতিবার(২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সেগুন বাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনকালে এ অনুরোধ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইংরেজি কম জানার কারণে রায়ে কি আছে, জানার জন্য অধিকাংশ বিচারপ্রার্থীকে তার আইনজীবীর ওপর নির্ভর করতে হয়। রায়ে কি আছে তা বিচারপ্রার্থীর জানার সুযোগ থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে এ কারণে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘যারা আদালতে রয়েছেন তারা যদি মাতৃভাষায় রায় লেখার অভ্যাস করেন, তাহলে স্বল্পশিক্ষিতদেরও রায়টা পড়ে বোঝার সুবিধা হবে। তাদের অন্য কারও ওপর এজন্য নির্ভরশীল হতে হবে না। নিজেরাই বুঝতে পারব রায়ে কি আছে। সেটা আমার একটা অনুরোধ থাকবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর রায়ের ভাষা যদি ইংরেজিও হয় তাহলে রোমান স্টাইলে না লিখে একটু সহজ ইংরেজিতে লেখা, যে ভাষাটা সকলেই বুঝতে পারে, সেই ভাষাতেই লেখা উচিত। বাংলায় রায় লিখে সেটাও ইংরেজিতে ট্রান্সলেশন করে দিতে পারেন।’

বাংলাকে বিশ্বের অন্যতম বৈজ্ঞানিক ভাষা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু, আমরা বাংলা শেখার ব্যাপারে ইংরেজির মতো অত গুরুত্ব দেই না। তাই অনেকের কাছে বাংলা কঠিন বলে মনে হয়।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বানান ও উচ্চারণ নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে অনেক সময় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলেও এটি খুব বড় বিষয় নয়।’

তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের ভাষা শেখার ভিত্তি কিভাবে শক্ত করা যায়, তা নিয়ে সকলের ভাবা উচিত।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইংরেজিটা আমাদের শিখতে হবে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে। কিন্তু, সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষা, মাতৃভাষা, যে ভাষার জন্য আমরা জীবন দিয়েছি, সেই ভাষাটাও সঠিকভাবে সবাই যেন শিখতে পারে তার ব্যবস্থা করাটাও একান্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।’

দেশে তার সরকার এখন শিক্ষার হার বাড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে, তখন অক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন লোকের সংখ্যা ছিল কেবল ৪৫ ভাগ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইনজীবী যা বুঝিয়ে দেবেন, সেটিই তাকে (স্বল্পশিক্ষিত সাধারণ জনগণকে) বুঝতে হবে, নিজে পড়ে জানার কোনো সুযোগ তার থাকে না। যার ফলে অনেক সময় তাদের নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমি বলব, আদালতের রায়টা যদি কেউ ইংরেজিতেও লিখতে চান, লিখতে পারেন। কিন্তু, একটা শর্ত থাকবে, এটা বাংলা ভাষায় প্রচার করতে হবে, প্রকাশ করতে হবে।’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুর রহমান চৌধুরী নওফেল, বাংলাদেশে ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপো এবং শিক্ষা সচিব (মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ) সোহরাব হোসাইন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

বিশিষ্ট ভারতীয় চিন্তাবিদ এবং পিপলস লিঙ্গুইসটিক সার্ভের চেয়ারম্যান গণেশ এন দেবী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. জিন্নাত ইমতিয়াজ আলী স্বাগত বক্তৃতা করেন।

Bootstrap Image Preview