'বাংলাদেশকে কেউ গ্রাস করতে পারবে না। গ্রাস করতে আসলে ভাষাই তাকে প্রতিরোধ করবে। আর কেউ বাংলা ভাষার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ ফরাসিরা বাংলা ভাষার ওপর আক্রমণ করে পারেনি, ইংরেজরা পারেনি, এমনকি পাকিস্তানিরাও পারেনি। ইংরেজরা বিশ্বের অনেক দেশ শাসন করে চলে গেছে, কিন্তু তাদের ভাষা ইংলিশ হয়েছে। ইংরেজরা আমাদেরকে দুশ' বছর শাসন করেছে তবুও আমাদের ভাষা পরিবর্তন হয়নি। বিশ্বে অনেক ভাষা আছে তারা ভাষা রাষ্ট্র গঠন করতে পারেনি। কিন্তু আমরা পেরেছি এটাই আমাদের বড় শক্তি।'
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলা ভাষার বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক এ সব কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি স্বরণ করে বলেন, আমরা তখন ছোট ছিলাম। আমরা ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে হাটে-বাজারে মিছিল করতাম। সে সময় আমাদের সাথে অনেক কৃষকও মিছিলে যোগ দিত। তারা ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ দিতে ঘোলায় ফেলে বলত ‘বাংলা ভাষা রাষ্ট্র চাই’। আজ কালের পরিক্রমায় বাংলা ভাষার রাষ্ট্র আমরা দেখতে পাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আশকারীর সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘বাংলা ভাষার চাহিদা ছিল নতুন একটি রাষ্ট্র। সেই চাহিদা থেকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। বাংলাদেশ সৌভাগ্যবান যে বাংলার মত শ্রুতিমধুর একটি রাষ্ট্র ভাষা পেয়েছে। বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ একে আপরের জন্য আশীর্বাদ। এই দেশ এবং ভাষা আমাদের মাতৃদুগ্ধের স্বাদ দেয়।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা। আইন বিভাগের শিক্ষক আরমিন খাতুনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সমাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নাসিম বানু, ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের রুহুল কে এম সালেহ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরোয়ার মুর্শেদ।
এর আগে সকাল ৯টায় জাতীয় পতাকা এবং কালো পতাকা উত্তোলন করে উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য। এ ছাড়াও একুশের প্রথম প্রহর রাত ১২টা এক মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।