প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যারা আহত হয়ে বেঁচে আছেন তাদের চিকিৎসা চলছে। তাদের চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হবে না।
বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশ আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একুশই আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করতে। একুশ থেকে সৃষ্টি হয়েছে ৭১ ও একটি রাষ্ট্র। মাঝখানে ২১ বছর কেটেছে অন্ধকারে।
তিনি বলেন, শুধু বাংলা নয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য দায়িত্ব নিয়েছি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট সব দেশের মানুষের মায়ের ভাষা যেন রক্ষা করতে পারে সে জন্য এ প্রতিষ্ঠানের সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন না হয় আমরা শিক্ষার হার বাড়িয়েছি। কিন্তু, ৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন অক্ষর জ্ঞান সম্পন্নই ছিল মাত্র ৪৫ ভাগ। অধিকাংশ মানুষ বাংলা ভাষাতেও লেখা-পড়া জানতো না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ইংরেজি ভাষা শেখার প্রয়োজন আছে কিন্তু বাংলাকে বাদ দিয়ে নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আমরা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজি শিখব।
আদালতের রায় লেখার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতের রায় ইংরেজিতে লেখেন বিচারকরা। যা অনেকেই বুঝতে পারেন না। এ জন্য আইনজীবীর ওপর নির্ভর করতে হয়। অনেক সময় এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। আদালতের রায়টা বাংলায় প্রচার ও প্রকাশ করা যায় কি-না তা ভেবে দেখতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
ইংরেজিতে রায় লেখা যদি লাগেই তাহলে বাংলায় রায় লিখে ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করা যায় কি-না সেটা ভেবে দেখতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সেগুন বাগিচাস্থ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, পুরান ঢাকার চকবাজারে ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৭০ জনের মধ্যে ৪১ মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন নারী, দুই শিশু ও ৩৭ জন পুরুষ।
স্থানীয়রা বলছেন, চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।