Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পড়ে আছে চার বন্ধুর পোড়া মাথার খুলি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৫:০২ PM
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৫:২৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সময় বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা: সোহেল মাহমুদের মাধম্যে জানা যায় তারা ৭৮টি লাশ পেয়েছেন।

ঘটনার স্থান চকবাজারে পারিবারিক ওষুধের ব্যবসা ছিল মঞ্জুর। চুড়িহাট্টা জামে মসজিদের পাশে ওষুধের দোকান ‘হায়দার মেডিকো’। চকবাজারে ব্যবসা করতেন চার বন্ধু মঞ্জুর, হীরা, নাসির ও আনোয়ার। পাশেই ইমিটেশন গহনার ব্যবসা বন্ধু হীরার, ব্যাগের ব্যবসা ছিল আনোয়ারের। আর নাসিরের ছিল প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবসা।

প্রতিদিন কাজ শেষে হায়দার মেডিকোতে এসে বসতেন তারা। একসঙ্গে কিছু সময় গল্প-গুজব করে নিজ নিজ রুমে ফিরে যেতেন। কিন্তু বুধবার রাতে আর নিজ ঘরে ফেলা হলো না চার বন্ধুর। চকবাজারের ভয়াবহ আগুন কেড়ে নিয়েছে তাদের সব গল্প আর স্বপ্ন। চিহ্ন হিসেবে রেখে গেছে নোয়াখালীর চার বন্ধুর পোড়া চারটি মাথার খুলি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে মঞ্জুর ভাই লিটন জানান, তার ভাইয়ের ফার্মেসির সামনেই একটি গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এ সময় বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে মঞ্জু ও তার তিন বন্ধু দোকানের ভেতর ঢুকে শাটার লাগিয়ে দেয়। এরপর যখন আগুনের ভয়াবহতা বেড়ে যায় তখন আর তারা সেখান থেকে বের হতে পারেনি।

গতকাল বুধবার রাতে আগুনের সূত্রপাত মসজিদের মূল গেটের সামনে থেকেই। এ আগুনের লেলিহান শিখায় মসজিদের চারপাশের ৩০০ হাত এলাকার সব বাড়ি, দোকান ও অন্যান্য স্থাপনা পুড়ে ছাই। কঙ্কাল হয়ে দাঁড়িয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়ার সাক্ষ্য দিচ্ছে সুউচ্চ ভবনগুলোও। এর মধ্যে ব্যতিক্রম শুধু চুড়িহাট্টা জামে মসজিদ। জনমনে গভীর বিস্ময় জাগিয়ে মসজিদটি অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।

জানা যায়, চকবাজারের নন্দকুমার সড়কের চুড়িহাট্টায় বুধবার রাতে এই শাহী মসজিদের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির ট্রান্সফরমার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। মুহূর্তেই আগুন লাগে জামাল কমিউনিটি সেন্টারে। আগুনের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের চারতলা ওয়াহিদ ম্যানশনে। ভবনটির প্রথম দুইতলায় প্রসাধন সামগ্রী, প্লাস্টিকের দানা ও রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের গুদাম থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের আরো চারটি ভবনে। পাশের কয়েকটি খাবারের হোটেলের গ্যাস সিলিন্ডারেরও বিস্ফোরণ ঘটে। পুড়ে যায় সড়কে থাকা একটি প্রাইভেট কারসহ কয়েকটি যানবাহন। এ সময় পুড়ে যাওয়া কয়েকটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত লাশের সংখ্যা ৭৫ ছাড়িয়েছে। ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, রিকশাভ্যান, রাসায়নিক, দাহ্য পদার্থ, বডি স্প্রে, বোতল, পাউডার, প্লাস্টিকের দানা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ভস্মীভূত হওয়া ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে আরও একটি দুর্ঘটনা।

Bootstrap Image Preview