কাশ্মীরে পুলওয়ামাতে বোমা হামলার ঘটনায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর ৪৯ জন সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত আকাশ নিরাপত্তায় নতুন করে চিন্তা শুরু করেছে। ভারত সীমান্তে তার পুরনো শত্রু চীন ও পাকিস্তানকে আকাশপথে ঠেকাতে অত্যাধুনিক জাগুয়ার যুদ্ধবিমান ও তার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী চারটি ‘উইংম্যান ড্রোন’ আনছে।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে কমে যাওয়ার এ বিকল্প ভাবনা মাথায় আসে ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের।
এটি শত্রুপক্ষের বিমানঘাঁটি রাডারে ধরা পড়লেই সে খবর এ ড্রোনকে পৌঁছে দেবে বিমানবাহিনীর পাইলট। এর পরই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছুটে যাবে মিসাইলবাহী ড্রোন। তখন শত্রুপক্ষের বিমানঘাঁটি ধ্বংস হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা হবে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানায়, আগামী ১০ বছরের মধ্যেই ভারতীয় বিমানবাহিনী হাতে আসছে এই ‘উইংম্যান ড্রোন’। আর এই প্রযুক্তি এবং যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য উপযোগী করছে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (হ্যাল)।
এতে বলা হয়, এই প্রযুক্তিতে একটি জাগুয়ার যুদ্ধবিমানের সঙ্গে থাকবে তিন বা তার বেশিসংখ্যক ড্রোন। বিশেষভাবে তৈরি প্রতিটি ড্রোনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। তিন বা তার বেশি ‘উইংম্যান ড্রোন’ নিয়ে শত্রুপক্ষের আকাশসীমার দিকে যুদ্ধবিমান নিয়ে এগোতে থাকবে পাইলট আর শত্রুঘাঁটি নজরে এলেই সেই নির্দেশ পৌঁছে যাবে ড্রোনের কাছে। এরপরই সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে শত্রুঘাঁটিতে হামলা চালাবে উইংম্যান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড্রোনগুলো শুধুই পাইলটের সংকেতের জন্য অপেক্ষা করবে না। প্রতিটি উইংম্যান ড্রোনেই নিজস্ব রাডার এবং সেন্সর থাকে। দূর আকাশে সে যা দেখতে পায়, সেই সংকেতও সে প্রতি মুহূর্তে পাঠিয়ে দেয় পাইলটের কাছে। তাই পাইলট নিজে নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও এই ড্রোনগুলোকে পাঠিয়ে দিতে পারে শত্রু ঘাঁটিতে।
এনডিটিভিকে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিবিদ জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থায় শুধু আকাশ থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র বয়ে নিয়ে যেতে পারবে উইংম্যান। তার পর এই ড্রোনগুলোতে আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র যুক্ত করে দেওয়ার কাজ শুরু হবে। তখন শুধু শত্রুঘাঁটি নয়, যুদ্ধবিমানকেও আকাশে ধ্বংস করতে পারবে উইংম্যান।
প্রতিটি উইংম্যানের জন্য খরচ পড়ছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার বা পঁয়ত্রিশ কোটি টাকা। রাফাল বা অন্যান্য যুদ্ধবিমানের দাম এই উইংম্যানের থেকে বহু গুণ বেশি হওয়ায় এটির ওপর মনোযোগ প্রযুক্তিবিদদের।