ইউটিউব কন্টেন্ট বানিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাওয়া সালমান মুক্তাদির ‘অভদ্র প্রেম’ নামের একটি মিউজিক ভিডিও ইউটিউবে উন্মুক্ত করেন ৯ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকেই গানটি নিয়ে প্রচুর সমালোচনার জন্ম হয়। এজন্য নিজের ভক্ত ও সমালোচকদের ‘তীর্যক’ মন্তব্য শুনেছেন তিনি।
এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরের পর ঢাকার মিন্টো রোডে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে দেড় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এই যুবককে।
এরপর আজ বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুক লাইভে এসে ভুল স্বীকার করেছেন সালমান। তিনি জানান, তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন, সেজন্য তিনি অনুতপ্ত।
সালমান মুক্তাদির বলেন, আমার একটা গান প্রকাশ হয়েছিল অভদ্র প্রেম শিরোনামে। যেই গানটি বাংলাদেশে পরিপ্রেক্ষিতে খুব বেশি তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি করে। গানটির জন্য সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং আমাকে বলে এটা আমাদের দেশের কনটেক্সের বিপরীতে যায়। গানটি আমাকে নামিয়ে ফেলতে বলা হয়। আমি গানটি নামিয়ে দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছি এবং নামিয়ে দিয়েছি।
সালমান মুক্তাদির আরও বলেন, ভিডিওটি কোনোভাবেই আমাদের দেশের জন্য এক্সেপটেবল না। আমি চেষ্টা করবো গানটির ভিডিও আমাদের দেশের উপযোগী করে নির্মাণ করার জন্য। এছাড়া আমাদের নিরাপদ ইন্টারনেটের ডে ক্যাম্পেইন হচ্ছে সেটার সমর্থন করছি। আমি আশাবাদী এই ক্যাম্পেইনের একজন অ্যাম্বাসিডর হতে পারব। আমি সবাইকে আমন্ত্রণ জানাব এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহন করার জন্য এবং এটাকে সাধুবাদ জানানোর জন্য।
সালমান মুক্তাদির ইউটিউব চ্যানেলে নানা রকম ভিডিও পোস্ট করে আলোচনায় আসেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে অশ্লীল ভিডিও নির্মাণের অভিযোগ ওঠে।
চলতি মাসের ৬ তারিখ সালমান দ্য ব্রাউন ফিস নামের চ্যানেলে অভদ্র প্রেমের টিজার আপলোড করেন সালমান। ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখ ওই ভিডিও আপলোডের আগে ‘ফার্স্ট লুক’ও আপলোড করেন তিনি। ওইদিনই রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে ইউটিউবে আসে অভদ্র প্রেম। এরপর থেকে ‘ঝড়ের গতিতে’ কমতে থাকে তার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা। তখন ১৩ লক্ষাধিক সাবস্ক্রাইবার থাকলেও মাত্র সপ্তাহের ব্যবধানেই তা নেমে এসেছে ১১ লাখের নীচে।
তবে এখন আর ওই তিনটি ভিডিও’র একটিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তার চ্যানেলে। ইউটিউবে অভদ্র প্রেম লিখে সার্চ দিলে সালমানের চ্যানেলের অভদ্র প্রেমের থাম্বনেল দেখালেও সেটাতে ক্লিক করলেই ভিডিওটি নেই বলে জানাচ্ছে ইউটিউব। এছাড়া তার চ্যানেলে সরাসরি ঢুকলে দেখা যাচ্ছে না ওই তিনটি ভিডিওর একটিও।
এদিকে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সালমান মুক্তাদির ৮টার দিকে চলে যান। তিনি ভিডিও রিমুভ সংক্রান্ত কমিটমেন্ট (প্রতিশ্রুতি) দিয়েছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাকে কাউন্সিলিং ও নিরাপদ ইন্টারনেট সংক্রান্ত কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো মনিটর করা হচ্ছে। সহযোগিতা না করলে পরবর্তীতে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।