Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিয়ের প্রলোভনে তিনবছর শারীরিক সম্পর্ক, অতঃপর...

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১২:০৭ PM
আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১২:০৭ PM

bdmorning Image Preview


গাজীপুরের আজিম উদ্দিন কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী লাকী আক্তার (২২) নামে এক তরুণী তার প্রমিক ফারুক আহমেদের নামে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে।

‘প্রায় তিন বছর আগে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাঝুখান এলাকার আলকাছ মিয়ার মেয়ে এবং লাকী আক্তার ও একই উপজেলার লস্করচালা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ফারুক আহমেদের (২৫)। পরিচয় থেকে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। একসময় তা পরিণত হয় শারীরিক সম্পর্কে। ফলে ফারুক বিয়ের প্রস্তাব দেয় লাকী আক্তারকে। আর লাকী ফারুকের দেয়া প্রস্তাবে রাজী হয়।

এরপর থেকে তারা আরো বেশী ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা শুরু করে। পরে লাকী বেশকিছুদিন ধরে ফারুককে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয় কিন্তু ফারুক তা কৌশলে এড়িয়ে যায়।

৯ই ফেব্রুয়ারি লস্করচালা এলাকায় ফারুকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়। এসময় ফারুকের বাবা আবুল কাশেম, বড় ভাই ফরহাদ ও সুলতান নামের এক ব্যাক্তিসহ আরো কয়েকজন লাকীকে বেধরক মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে লাকী আক্তার ঘটনার তিন দিন পর (১৩ই ফেব্রুয়ারী) সকালে এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ভোক্তভুগী ওই নারীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কের আড়ালে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে লাকী আক্তারকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে ফারুক। দিন দিন এ অবস্থা বাড়তে থাকে যা গত তিন বছরে প্রায় শতাধিকবার। 

এরই মধ্যে সু-কৌশলে যৌন নির্যাতনের চিত্র ফারুক মোবাইলে ধারণ করে। লাকী বিয়ের জন্য বললে ফারুক ধারণকৃত ভিডিও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে দিবে বলে লাকীকে হুমকি দিতে থাকে।

এসব হুমকির পরে লাকী প্রেমিক ফারুককে জানায়, তাকে বিয়ে না করলে সে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করবে। তবে প্রতি উত্তরে ফারুক লাকীকে বলে ‘তোর অশ্লীল ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেব’ এ কথার শোনার পর লাকী ওই দিন রাতেই ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে বাড়ির লোকজন টের পাওয়ায় সে যাত্রায় রক্ষা পায় লাকী।

থানায় লাকী আক্তারের অভিযোগের তদন্তভার পরে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামের উপর। লাকীর অভিযোগ, সেখানেও তাকে নিয়ে চলে নানা তাল বাহানা। ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ফারুকের সাথে বিভিন্ন সময়ে তার বিশেষ মূহুর্তের ছবি দেখান। এছাড়া ফারুকের কাছে আরো অশ্লীল ছবি আছে সেগুলো উদ্ধারের তাগাদা দেন। কিন্তু কোন তৎপরতা না দেখিয়ে এসআই রফিকুর আগামী বুধবার পুলিশ ফাঁড়িতে দুই পক্ষকে বসার জন্য ডেকেছেন বলে জানান লাকী।

লাকী আক্তার গণমাধ্যমে জানান, গত তিন বছর ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফারুক আমাকে যৌন নির্যাতনসহ অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে জিম্মি করেছে। যখনই বিয়ের কথা বলি তখনই সে অশ্লীল ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমাকে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করবো বলে জানান লাকী।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফারুক আহমেদের বড় ভাই ফরহাদ মিয়া জানান, ‘ওই ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য তারা নাটক করছে। তবে ফারুকের সাথে কথা বলতে চাইলে ফরহাদ মিয়া মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।’

অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে দেখছি। তবে আগামী বুধবার দুই পক্ষকেই ডাকা হয়েছে। দুই পক্ষের লোকজন আসলে বিষয়টি পরিস্কার হবে।’

Bootstrap Image Preview