জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) লাইব্রেরি ও ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকসহ গুরুত্বপূর্ণ ৫টি পদে রদবদল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণেই তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ এর শিক্ষকরা অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকরা উপাচার্য বিরোধী হওয়ার কারণেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অব্যাহতির এ তথ্য জানানো হয়। একই দিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ উপস্থাপন করেন সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের শিক্ষকরা।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক ও ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদারকে অব্যাহতি দিয়ে যথাক্রমে অধ্যাপক হানিফ আলি ও অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুর রশিদকে অব্যাহতি দিয়ে তারস্থলে অধ্যাপক মো. মঞ্জুরুল হাসানকে, আরেক অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক তপন কুমার সাহার স্থলে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সোহায়েলকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক খবির উদ্দিনকে অব্যাহতি দিয়ে তারস্থলে অধ্যাপক এ এ মামুনকে সাময়িক ভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে চার বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি পাওয়া সকলেই উপাচার্য বিরোধী শিক্ষক ছিলেন। অন্যদিকে নতুন নিয়োগ পাওয়া সবাই উপাচার্যপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত।
উপাচার্য বিরোধী আওয়ামী (একাংশ), বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত জোট ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে বহাল তবিয়তে আছেন।
উপাচার্যপন্থী শিক্ষক হওয়ায় যথাক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ছাত্র কল্যাণ ও পরামর্শ দান কেন্দ্রের পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক বশির আহমেদ ও অধ্যাপক রাশেদা আখতারকে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও বাদ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন জোটের শিক্ষক নেতারা। এটাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তারা।
মেয়াদোত্তীর্ণদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এটাতে আমাদের কোন নীতিগত আপত্তি নেই। কিন্তু কাউকে বাদ দেওয়া হচ্ছে আবার কাউকে রেখে দেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের এমন বৈষম্যমূলক আচরণ শিক্ষকদের মধ্যে সৌহার্দ্যের সংকট তৈরি করবে বলে মনে করেন তারা।