Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তারেক রহমানকে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টে ৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:১১ AM
আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:১১ AM

bdmorning Image Preview


লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট। দীর্ঘ ৪ ঘণ্টাব্যাপী তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত তারেককে দেশে ফেরত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই জিজ্ঞাসবাদ করা হয় বলে যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্র দফতরের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে।

তারেক রহমানকে ফেরত পাওয়া পেতে বাংলাদেশ সরকারের আবেদনটি কমনওয়েলথ দেশগুলোর ২০০৩ সালের এক্সট্রাডিশন আইন অনুযায়ী পর্যালোচনা করছে ব্রিটিশ সরকার। এরই অংশ হিসেবে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার তারেক রহমানকে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা ৪ ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টের এই জিজ্ঞাসবাদ তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে আরো একধাপ এগিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মন্ত্রনালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, এই জিজ্ঞাসাবাদে বাংলাদেশ সরকার আশাবাদি হয়ে ওঠেছে যে, যে কোনো সময় তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিবে। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকার নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে।

দণ্ডিত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার ব্রিটিশ সরকারের কাছে বিভিন্ন সময় একাধিকবার আবেদন করে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক তৎপরতায় এবারই প্রথম যুক্তরাজ্যের হোম অফিসে তাকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো।

সূত্র থেকে জানায়, ৪টি বিষয়কে সামনে রেখে তারেক রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শুরুতেই জানতে চাওয়া হয়, তারেক রহমান লন্ডনে কীভাবে চলছেন, তার আয়ের উৎস কি, কোথা থেকে থেকে টাকা আসছে? রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা একজন ব্যক্তি হয়ে তিনি কেনো নিজ দেশের রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েছেন, বিষয়টি তারেককে ব্যাখ্যা করতে বলেন, ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা।

তারেক রহমানকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশ সরকার যে আবেদন করেছে, সেখানে দেশি-বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার যোগাযোগ থাকার বিষয়ে কিছু তথ্য প্রমাণ সরকারের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরে পাঠানো হয়েছে। ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট তারেকের কাছে এ ব্যাপারেও জানতে চায়। পাশাপাশি লন্ডনে অবস্থান করে তারেক রহমানের সঙ্গে পাকিস্তানদূতাবাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে বাংলাদেশে ব্যাপক নাশকতার পকিল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছে। এ বিষয়ে তারেকের বক্তব্য শোনেন ব্রিটিশ হোম অফিসের কর্মকর্তারা। তবে বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে তারেক কি বলেছেন তা জানা যায়নি।

সূত্র আরো জানা গেছে, প্রায় চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হোম অফিসের কর্মকর্তারা তারেক রহমানকে আবারো যে কোনো সময় তলব করা হতে পারে জানিয়ে বিদায় দেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। জানতে চাইলে দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও নবগঠিত পররাষ্ট্র বিষয়ক ফোরাম ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এসব হচ্ছে বর্তমান সরকারের মিথ্যা অপপ্রচার ও প্রপাগান্ডা। এসব বিষয়ের কোনো ভিত্তি নেই। তারেক রহমান জিজ্ঞাসাবাদের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সেনা সমর্থিত তত্ববধায়ক সরকারের আমলে দূর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করে তারেক রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। সেই থেকে তিনি লন্ডনেই আছেন। সেখানে অবস্থান করেই দলীয় কার্যক্রমে নানাভাবে অংশ নিচ্ছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান।

Bootstrap Image Preview