Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ওমানে নির্যাতনের শিকার, দেশে ফিরলেও ভয়ে স্বামীর ঘরে ফিরতে পারছে না!

হাবিব সরোয়ার আজাদ, সিলেট প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:০৬ PM
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:০৬ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: বিডিমর্নিং


মধ্যপ্রাচ্যের ওমান থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে দেশে ফিরলেও ভয়ে স্বামীর ঘরে ফিরতে নারাজ সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জের এক নারী। গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে ওমানে যায় দিলারা বেগম (২৬) ছদ্দনাম। তিনি দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বীরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।

শুক্রবার ওমান থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে দেশের মাটিতে পা রেখেই ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তার ওপর চলা নির্যাতনের কথাগুলো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছর ১০ জানুয়ারী দিলারা গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে ওমানে যান ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে। কিন্তু দ্বীর্ঘ এক মাসেরও বেশী সময় প্রবাসে তিনি নির্যাতনের শিকার হন।

দিলারা বেগম ইমিগ্রেশন ওসির নিকট তার ওপর প্রবাসে নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমার অমানুষিক নির্যাতন করেছে ওমানের মালিক (কফিল)। তার দুই চোখের নিচে কালো দাগ, মাথায় সেলাই।

তিনি বলেন, নির্যাতন সইতে না পেরে আমি দেশে আসতে চাইলে মালিক উল্টো আমার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে। পরে ওমানে অবস্থানরত আমার এক ভাই  ‍মুক্তিপণ বাবত এক লাখ টাকা দিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে এনে দেশে পাঠায়।"

দিলারা আরো বলেন" আমি নির্যাতনের শিকার হইয়া ফিরছি। বাড়িত গেলে আমার স্বামী আমারে ঘরো তুলতা নায়। আমার স্বামী কইছে ওমানের মালিক আমার সাথে খারাপ কাজ করছে, এর লাইগ্যা বাড়িত গেলে হাত পা ভাইঙ্গা ফালাইবো। স্যার আমি বাড়িত যাইতে চাইনা, আপনারা আমারে বাঁচাইন।"

ইমিগ্রেশন ওসি দিলারার কথা শুনে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

ইমিগ্রেশন থেকে বিষয়টি জানানো হয় বিমান বন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেক্স ও ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম কর্মকর্তাদের। ইমিগ্রেশনে দিলারার সাথে কথা বলেন ব্রাকের তথ্য কর্মকর্তা আল আমিন নয়ন।

শনিবার আল আমিন নয়ন গণমাধ্যমকে বলেন,"দিলারার সাথে কথা বলে জানতে পারি তার স্বামী খুবএকটা ভাল মানুষ না। নিয়মিত জুয়া খেলেন। এখন দিলারা তার বাড়ি গেলে তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করবেন না দিলারার স্বামী। উপরন্তু  মারধর করবেন। দিলারার বাবা মা গরীব তাই তাদের কাছে ফিরে গেলে তাদের সংসারের বোঝা হয়ে যাবেন। তিনি বার বার বলছিলেন তাকে একটি কাজের ব্যবস্থা করে দিতে।"

এদিকে দেশে আসার পরপরই ব্রাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে দিলারাকে জরুরী সেবা দেওয়া হয়। দিলারার ভাইকে ঢাকায় এনে শুক্রবার দুপুরে আপাতত তার বাবার বাড়িতে পাঠানো হয় বলে জানান ব্রাকের তথ্য কর্মকর্তা আল আমিন নয়ন।,

শনিবার  বিকেলে এ বিষয়ে অবহিত করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসির দায়িত্বে থাকা এসআই আলা উদ্দিন বলেন, ভোক্তভোগী নারী যদি অভিযোগ করেন কোন দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রবাসে গিয়ে প্রতারিত ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সে বিষয়ে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে পাশাপাশী ওই নারী যাতে স্বামীর সংসারে ফিরতে পারেন সে ব্যাপারেও পুলিশী সহায়তা করা হবে।

Bootstrap Image Preview