Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিএনপি নেতাকে বোমা মেরে হত্যার কারণ জানালো পুলিশ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৩৬ PM
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৩৯ PM

bdmorning Image Preview


ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ও পারিবারিক জমিসংক্রান্ত বিরোধে রামপালে বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন আখতারকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। এছাড়া তাকে হত্যার আরো ২টি কারণ প্রথমিকভাবে চিনহিত করেছে পুলিশ।

শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। রামপাল থানায় এখনো কোনো মামলাও হয়নি। 

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার বিএনপি নেতার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে সোনাতুনিয়া মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা-মোংলা মহাসড়কে রামপাল উপজেলার ভরসাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একদল সন্ত্রাসী তার ওপর বোমা হামলা চালালে বিএনপি নেতা খাজা মঈনুদ্দিন আখতার (৬০) নিহত হন।

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভরসাপুর বাজার এলাকার কমল মার্কেটের সামনে হঠাৎ বিস্ফোরণের একটি বিকট শব্দ শুনতে পান তারা। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন কোনো দোকানে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে। তারা ওই শব্দ পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখেন কমলা মার্কেট এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর ধোঁয়া কমলে দেখেন সাবেক চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ওপরে পড়ে আছেন। সবাই তাকে রাস্তা থেকে তুলে গাড়িতে করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যুর খবর হাসপাতাল থেকে শুনতে পান তারা।

স্থানীয়রা আরও জানান, স্থানীয় সাধারণ মানুষের বিপদে-আপদে মঈনুদ্দিন সবার পাশে ছুটে যেতেন। তার এমন মৃত্যুতে এলাকাবাসী বিস্মিত। তারা হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের কাছে দাবি জানান।

নিহত বিএনপি নেতার স্ত্রী চম্পামালা বেগম বলেন, মঈনুদ্দিন আখতারের ওপর বোমা হামলার কয়েক মিনিট আগেই ভরসাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তার কথা হয়। তাকে বাজার করার কথা বলে আমি ভ্যানযোগে ফয়লা এলাকায় চলে আসি। এর কিছুক্ষণ পরে জানতে পারি তার ওপর বোমা হামলা করা হয়েছে। আমার সঙ্গে তার আর দেখা হয়নি। কয়েক বছর ধরেই তিনি মামলা-হামলার কারণে রাজনীতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সব ধরনের বিরোধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন।

নিহতের স্ত্রী আরও জানান, উজলকুড় ইউনিয়ন পরিষদের তিন-তিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন মঈনুদ্দিন। আমার শ্বশুর খাজা সোবাহান আলীও এখানকার চেয়ারম্যান ছিলেন। সামনে হজে যাওয়ার জন্য মঈনুদ্দিন টাকা জামা দিয়েছিলেন। তাকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

বাগেরহাট জেলা বিএনপির সহসভাপতি ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, খাজা মঈনউদ্দিন আখতার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজলকুড় ইউনিয়নের ৩ বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এর আগেও তার ওপর একাধিকবার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। কারা, কী কারণে তার ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে; তাদের খুঁজে বের করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় শুক্রবার বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন আখতারকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ও পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা বোমা মেরে হত্যা করেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ওই দুটি কারণকে গুরুত্ব দিয়ে ইতিমধ্যে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ শুরু করছে। আশা করছি, এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ খুব শিগগির আসামিদের ধরতে পারবে এবং হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হবে।

Bootstrap Image Preview