Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

একই গাড়ি, একই দুর্ঘটনা, একই আঘাত, অতঃপর…

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:১৩ PM
আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:১৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


হয়ত একেই বলে ভালোবাসা। একই গাড়ি, একই দুর্ঘটনা, একই আঘাত। এর পর থেকে দুজনই হুইল চেয়ারে বন্দী। ব্যবধানটা মাত্র দু’বছরের। তারপরে প্রথম দেখায় তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। এরপর চিরজীবনের সঙ্গী। ঘটনাটি ভারতের মুম্বাইয়ের এক দম্পতির।

হুইল চেয়ারের বাসিন্দা ওই দম্পতির নাম নেহাল থক্কর ও অনুপ চন্দ্রন। তাদের বিয়েটা যেন রূপকথার বিয়েকেও হার মানায়। এ কারণেই আজ ‌‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে’ নিজেদের কাছে আসার, ভালোবাসার গল্প শেয়ার করেছেন এ দম্পতি।

নেহাল ও অনুপ জানান, মুম্বাইয়ে চিকিৎসা করাতে এসে তাদের আলাপ হয়। কিন্তু দুজনেই হুইলচেয়ারে বন্দী হয়ে গেলেন কীভাবে?

জানা গেছে, মুম্বাইয়ের রাস্তায় দুর্ঘটনায় শিরদাঁড়ায় মারাত্মক চোট পান অনুপ। এর ফলে হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন সারা জীবনের মতো। একই রাস্তায় একই তারিখে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন নেহালও। তিনিও হারিয়ে ফেলেন হাঁটাচলা করার ক্ষমতা। তবে তাদের মধ্যে পার্থক্য কেবল একটাই, তা হলো বছর।

অনুপের দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০০৩ সালের ২২ জুন। আর নেহালর ক্ষেত্রে ২০০৫ সালের ২২ জুন। দুর্ঘটনার দিন দুজনেই ছিলেন মারুতি জেন মডেলের গাড়িতে।

চিকিৎসা করাতে এসে আলাপ হয়েছিল দুজনের। একই জায়গায় একই রকম আঘাত পাওয়া, একই রকম জীবন কাটানোর ধরনটাই বন্ধুত্ব হওয়ার প্রধান কারণ। এর পরেই সিনেমা দেখা, কফি খাওয়া, সারা জীবনের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া, একটি সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেন অনুপ।

অনুপ একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে কর্মরত। আর নেহাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা চালান হুইলচেয়ারে বসেই। ভালোবাসার কাছে হার মেনেছে তাদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার।

অনুপ বলেন, নেহাল ২০ দিনের জন্য একবার দেশের বাইরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে নেহালকে তিনি প্রচণ্ড মিস করেছিলেন। নেহালও জানিয়েছেন একই কথা।

ফেরার পর দুজনেই বলেন, কতটা মিস করেছেন পরস্পরকে। কারণ ভালোবাসা। এর পর সাত বছর চুটিয়ে প্রেম। আর তারপরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা।

বাড়ির লোক প্রথমে মানতে পারেননি হুইল চেয়ারে থাকা দুটো মানুষ কীভাবে পরস্পরের পাশে থাকবেন। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সমাজও। অনুপ দক্ষিণ ভারতীয়। অন্য দিকে নেহাল গুজরাতি। কিন্তু তারা পেরেছেন। অন্য কারো সাহায্যে তাদের চলাফেরা করতে হলেও মনের জোর পেয়েছেন পরস্পরের। তাই কোনো কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তাদের ভালোবাসায়।

২০১৮ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন তারা। সংসারও করছেন দিব্যি। বিয়ের পর গোয়াও বেড়াতে গিয়েছিলেন তারা। মেহেন্দি থেকে সঙ্গীত, বিয়ের সবকটি রীতিনীতি মেনেই গাঁটছড়া বেঁধেছেন এই দম্পতি। এমনকি বরপক্ষ ও কনেপক্ষের প্রত্যেকের সঙ্গে হুইল চেয়ারে বসে দিব্যি নাচের ছন্দে মেতেছেন দুজনে। বাকি জীবনটাও এমন আনন্দেই কাটাতে চান এ দম্পতি। খবর আনন্দবাজার

Bootstrap Image Preview