Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হাসপাতালে রোগীর তুলনায় অপর্যাপ্ত খাদ্য

আজিজুল ইসলাম সজীব, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৩:১৪ PM
আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৩:১৪ PM

bdmorning Image Preview


হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন পরিবেশন করা হচ্ছে অপর্যাপ্ত, দুর্গন্ধযুক্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার। যে কারণে সুস্থ হওয়ার জন্য ভর্তি হওয়া রোগীরা আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে। চুক্তি অনুযায়ী মাথাপিছু যে পরিমাণ খাবার দেয়ার কথা, সেই পরিমাণ না দেয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে রোগীদের মাঝে।

হাসপাতাল সূত্র ও রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের ৫টি ওয়ার্ডে রয়েছে ১০০টি শয্যা। প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন কমপক্ষে আড়াইশ’ জন।

কর্তৃপক্ষের সাথে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চুক্তি অনুযায়ী ২৫০ জন রোগীর মাঝে প্রতিদিন তিনবারে মাথাপিছু ১২৫ টাকার খাবার পরিবেশনের কথা। কিন্তু ১০০টি শয্যায় অবস্থানকারী রোগীর বাইরে বাকী দেড়শ’ জনকে দেয়া হচ্ছে না কোনও খাবার। চুক্তি অনুযায়ী মাথাপিছু নির্দিষ্ট রয়েছে ২৪০ গ্রাম চাল, ১৫০ গ্রাম মাছ অথবা মাংস, ১৫ গ্রাম তেল এবং ১৫ গ্রাম ডাল, পাউরুটি, কলা, ডিমসহ অন্যান্য খাবার। তবে এর অর্ধেকও দেয়া হচ্ছে না রোগীদেরকে।

চুনারুঘাটের পারকুল চা বাগানের আজম বিবি জানান, ৫ দিন ধরে তার জন্ডিস আক্রান্ত মেয়ে অনিতাকে (৫) নিয়ে তিনি হাসপাতাল ভর্তি। একদিন সকালে একটি পোল্ট্রি মুরগীর ডিম, ছোট সাইজের কলা এবং নামে মাত্র এক টুকরো পাউরুটি পেলেও বাকী ৪ দিন তাও পাননি। এছাড়া দুপুরে এবং রাতে ২ দিন ছোট এক টুকুরো মাছ পেলেও বাকী ৩ দিন জুটেছে শুধু এক টুকরো ডিম, অল্পকিছু ঝোল আর খানিকটা ডাল অথবা সবজি। এছাড়া প্রতিবেলাই দেয়া হচ্ছে পুরাতন এবং দুর্গন্ধযুক্ত খাবার। যা খাওয়া তো দূরের কথা মুখের সামনেই নেয়া যায় না।

হবিগঞ্জ শহরের উমেদনগর এলাকার বাসিন্দা সুজেতা আক্তার নামের অপর এক রোগী জানান, তিনি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫ দিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে জ্বর সেরে উঠলেও পুনরায় আক্রান্ত হয়েছেন ডায়রিয়ায়। এজন্য প্রতিদিন খাওয়া অস্বাস্থ্যকর খাবারকেই দায়ী করেন তিনি। এছাড়াও হাসপাতালে ভর্তি, সামিরুন, হামিদা আক্তার, উম্মে তাবাসসুম জুই, লোকমান আহমেদ ও রফিক আহমেদসহ কয়েকজন জানান, সিট না পাওয়ায় তাদেরকে খাবার দেয়া হচ্ছে না। খাবার চাইলে তাদেরকে বলা হচ্ছে যেদিন থেকে সিট মিলবে, সেদিন থেকে পাওয়া যাবে খাবার। এর আগে নয়। অথচ চুক্তি অনুযায়ী সিটের বাইরে থাকা দেড়শ’ জনকে প্রতিদিন খাবার দেয়ার কথা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, রোগীরা সুস্থ হওয়ার জন্য হাসপাতালে আসে। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের ফলে এখানে এসে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকেন সাধারণ মানুষ। খাবারে বিভিন্ন ধরনের পোকা-মাকড় ভেসে থাকতে দেখা যায় বলেও জানান তিনি।

হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার সাইফুর রহমান জানান, এসব তার দেখার বিষয় নয়, অন্য কারো সাথে কথা বলতে হবে।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতীন্দ্র চন্দ্র দেব জানান, বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী আজিজুর রহমান আজিজ জানান, আমরা সঠিকভাবেই খাবার পরিবেশন করে থাকি। তবে তার সাথে কথা না বলে বাবুর্চিসহ কর্মচারীদের সাথে আলাপ করতে বলেন তিনি।

Bootstrap Image Preview