রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউজ্জামান। এই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের একাংশ।
বুধবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বদিউজ্জামানের সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছেন।
এই বিষয় বদিউজ্জামান জানান, সভাপতির মতামত ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কোনো সভাই ডাকতে পারে না। অগঠনতান্ত্রিক এই সিদ্ধান্তের জন্য তিনি দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চান।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেলে গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের বর্ধিত সভা হয়। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় মো. বদিউজ্জামানকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে সরাসারি বহিষ্কারের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ওই সভায়।
সেখানেই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে কার্যনির্বাহী কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এই সভার সিদ্ধান্ত যখন নেয়া হয় তখন বদিউজ্জামান তার সমর্থকদের নিয়ে উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নে গণসংযোগ করছিলেন। এ খবর জানাজানি হবার পর বিক্ষোভ মিছিল করেন সভাপতির অনুসারীরা।
বদিউজ্জামান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে উপজেলা কমিটি বহিষ্কার করার ক্ষমতা রাখে না। উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো সভা আহ্বান করতে হলে সভাপতির মতামত নিতে হয়। যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা মতামত নেয়া তো দূরের কথা, সভার বিষয়টি তাকেও অবহিত পর্যন্ত করেননি।
তিনি বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অবৈধ। তিনি এই অগঠনতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চাই।
এর আগে গত রোববার বদিউজ্জামান মনোনয়ন তোলার পর বলেছিলেন, উপজেলা থেকে পাঠানো তালিকায় তার নাম ছিল এক নম্বরে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের নাম চার নম্বরে। পরে এই তালিকা পরিবর্তন করে জাহাঙ্গীরের নাম এক নম্বরে দিয়ে নতুন তালিকা কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে। সেই রেজুলেশনে তার সই নেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, গোদাগাড়ীর মানুষ এটা মেনে নেবে না। তাকে যদি শুধু হত্যা করা না হয়, তাহলে আগামী ১০ মার্চ তিনিই হবেন গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান।
এই সভার রেজুলেশনে স্বাক্ষরকারী গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ বলেন, দলের গঠনতন্ত্র ও শীর্ষ নেতাদের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বর্ধিতসভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন বদিউজ্জামান প্রতিবাদ করছেন না, বিক্ষোভ করছেন, এটা তার ব্যাপার।
জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বদিউজ্জামান প্রার্থী হয়েছেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল। তবে তাকে যে প্রক্রিয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে সেটিও গঠনতন্ত্রবিরোধী।