Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

একসঙ্গে এত টাকা আগে কখনো দেখিনি, গুনতে ভালোই লাগে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৫১ PM
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৫১ PM

bdmorning Image Preview


বগুড়া মহাস্থানগড়ের মাজারের দানের জন্য রক্ষিত নয়টি সিন্দুক খোলা হয়েছে। দানবাক্সের টাকা গণনার জন্য ১৪ জন স্কুলছাত্র ও স্থানীয় রূপালী ব্যাংকের সাতজন কর্মচারীর সহায়তা নেয়া হয়েছে। টাকা গণনা শেষ হতে বুধবার পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন মাজার কমিটির কর্মকর্তারা।

মাজার কমিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহেদুর রহমান বলেন, মাজার কমিটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন মাস পরপর জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাজারের সিন্দুকগুলো খোলা এবং টাকা-পয়সা গণনা করা হয়। বিপুল পরিমাণ টাকার মধ্য থেকে বিভিন্ন নোট বাছাইয়ের কাজে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা নেয়া হয়। এজন্য তাদের প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে সম্মানী দেয়া হয়। এছাড়া নোটগুলো গণনা করে বান্ডিল তৈরির জন্য স্থানীয় রূপালী ব্যাংকের সাতজন কর্মচারীর সহায়তা নেয়া হয়। তাদের দৈনিক ৫০০ টাকা সম্মানী দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, মাজারের টাকা গণনা করতে কমপক্ষে তিন দিন সময় লাগে। তিন দিন ধরে টাকা গণনা চলবে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর সিন্দুক খুলে মোট ৩৬ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা পাওয়া যায়। এর আগে ২০১৮ সালের ১১ মে থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দানবাক্সে ৮৭ লাখ ৫৫ হাজার ১০৩ টাকা পাওয়া যায়। এবার ৫০ লাখের বেশি টাকা হবে।

মাজার কমিটির নামে বর্তমানে ব্যাংকে প্রায় তিন কোটি টাকা রয়েছে জানিয়ে জাহেদুর রমহমান আরও বলেন, এসব টাকা শুধু মাজারের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। পাশাপাশি মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনসহ ৩৬ জন কর্মচারীর বেতন-ভাতা দেয়া হয়। প্রতিবারের মতো এবারও গণনা শেষে টাকাগুলো মাজার কমিটির হিসাবে জমা রাখা হবে।

টাকা গণনা তদারকিতে নিয়োজিত বগুড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজ উদ্দিন বলেন, ১৯৮৭ সাল থেকে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে মাজার কমিটি পরিচালিত হচ্ছে। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক এই কমিটির সভাপতি।

এবার টাকা গণনা করছে মাজারের পাশের মহাস্থানগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তাদের একজন বলেন, একসঙ্গে এত টাকা আগে কখনো দেখিনি। মাজারের টাকা গণনা করতে ভালোই লাগে।

টাকা গণনায় উপস্থিত রূপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখার ব্যবস্থাপক আল-আমিন বলেন, মাজার কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে টাকাগুলো গণনার জন্য সাতজন কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে।

জানা যায়, শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য রাজত্ব ছেড়ে প্রায় ৭০০ বছর আগে পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী পুন্ড্রনগর তথা আজকের বগুড়ার মহাস্থানগড়ে আসেন।

মহাস্থানগড়ে পৌঁছে তিনি ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন। ধর্ম প্রচার নিয়ে পুন্ড্রবর্ধনের তৎকালীন রাজা পরশুরামের সঙ্গে তার যুদ্ধ হয়। ১৩৪৩ সালে তিনি পরশুরামকে পরাজিত করেন। পরে শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী মৃত্যুবরণ করলে তার মাজার নির্মিত হয়।

প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার মাজারে মাহফিল হয়। তার কবর জিয়ারত করলে পুণ্য হবে মনে করে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ এখানে আসেন। মাজারের চারদিকে রাখা সিন্দুকগুলোতে অর্থ দান করেন তারা।

Bootstrap Image Preview