Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মহাদেবপুরে ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে অতিষ্ঠ জনসাধারণ

ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১১:২৩ AM
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১১:২৩ AM

bdmorning Image Preview


অবৈধ ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে অতিষ্ঠ জনসাধারণ। বিশাল চাকার জটিল প্রযুক্তির ট্রাক্টরগুলো নিয়ম বহির্ভূত চলাচলের ফলে যে কোন সময় কেড়ে নিতে পারে জীবন্ত প্রাণ। এদের চাকার নিচে পিষ্ট হলে মৃত্যু অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে এবং আইনের তোয়াক্কা না করে অনেকটা বেখেয়ালভাবেই প্রতিনিয়ত অবাধে চলাচল করছে এ ট্রাকগুলো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে বছর জুড়েই বালু ও মাটি বহন করে বাঁধের সর্বনাশ করছে স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী এবং একশ্রেণীর ইটভাটা মালিক। বাঁধের আশপাশের বাসিন্দাদের অনেকটাই জিম্মি করে বালু ব্যবসায়ী ও ইট ভাটা মালিকরা অবাধে বহনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এমনি অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এদিকে অনভিজ্ঞ চালক লক্কড় ঝক্কড় যান দিয়ে বালু ও মাটি বহন করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে ধুলাবালির কারণে সড়কে হেঁটে চলাচলকারী জনসাধারণ এবং স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ নানা প্রকার সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ এ যানবাহন চলাচলে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো এসব চলাচল করতে সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

জানা গেছে, কৃষি জমি চাষাবাদে গরুর লাঙ্গলের বিকল্প হিসেবে প্রায় তিন দশক পূর্বে সারাদেশের ন্যায় মহাদেবপুরেও আবির্ভাব ঘটে ট্রাক্টর নামক যান্ত্রিক লাঙ্গলের। কিন্তু সে কৃষি ট্রাক্টর মাঠের জমিতে খুব একটা বেশিদিন টিকেনি। আবাদি জমি ছেড়ে স্থান করে নিয়েছে উপজেলা সদরসহ গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও বাজার কেন্দ্রিক সড়কগুলোতে। চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টরগুলো পরিবহণে রূপান্তরের পর থেকেই গ্রামীণ জনপদে সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করে। যদিও তা মাত্রায় ছিল সহনশীল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে চাহিদা মেটাতে ট্রাকের চেয়ে ট্রাক্টরের ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ায় তার সংখ্যাটা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক তখনি তা জনসাধারণের কাছে এক অজানা ভয়ে রূপান্তরীত হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান ইট ভাটাগুলো পুরোদমে উৎপাদনে আসার ফলে ট্রাক্টরগুলোর চাহিদা বছরের যে কোন সময়ের তুলনায় এখন অত্যাধিক। আর সে সুযোগেই তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এখানকার প্রায় সমস্ত ছোটবড় সড়কগুলোতে।

সম্প্রতি আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, উপজেলা সদরের বকের মোড়, মাছের মোড়, পোষ্ট অফিস মোড় ও বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলাচলকারী মালবোঝাই ট্রাক্টরের লাইসেন্স নেই। কোন কোন ট্রাক্টর ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মালামাল বোঝায় করে বেপরোয়া চলাচল করছে। চালকের নেই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং কিছু চালকের বয়সও খুব কম।

পথচারী মাসুদ, ফরহাদ, সবুজ, ফারুক, মুনছুর ও তারেক জানায়, অদক্ষ চালক ও বৈধ কোন কাগজপত্র ছাড়াই ট্রাক্টরগুলো সড়কে চলাচলের ফলে প্রায়ই নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। বেপরোয়া গতির এসব ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে বিগত কয়েক বছরে প্রচুর মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তরা আরো জানান, ট্রাক্টর চলাচলে সৃষ্ট ধুলাবলির কারণে চরম অসুবিধায় চলা ফেরা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে খোলা অবস্থায় বালু বহনের ফলে চোখ নষ্টের ভয় থেকেই যাচ্ছে বলেও জানান তারা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন জানান, অবৈধ্য যানবাহনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত এ যানবাহনটির বিরদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Bootstrap Image Preview