Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঘোড়াকে ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:০২ PM
আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:০২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ঘোড়ার গাড়ি চালাতেন শহিদুল ইসলাম। তার আয়ের একমাত্র উৎস ও অভাব অনটনের সংসারটির একমাত্র সম্বল ছিল ঘোড়াটি। এই ঘোড়ার ওপর নির্ভর করে চালাতেন তার ছয় সদস্যের সংসার। চালাতেন দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ। ওষুধ কিনতেন বৃদ্ধ মায়ের জন্য। শহিদুলের সেই ঘোড়াটি রবিবার রাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।

শহিদুলের দাবি দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধে থাকা প্রতিপক্ষরাই তার ঘোড়াটি মেরে ফেলেছে।

ঘোড়াটি ছিল শহিদুলের কাছে সম্বল, সম্পদ, নির্ভরতা। এক কথায় আপনজন। প্রতিদিন ঘোড়াটিকে নিজ হাতে খাবার দিতেন তিনি। সেবাযত্ন করতেন নিয়মিত। প্রিয় ঘোড়াটি হারিয়ে এখন নিঃস্ব শহিদুল।

কিভাবে চলবে তার সংসার? ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ? এ নিয়ে দিশেহারা তিনি। শহিদুল উপজেলার বড়চওনা গায়েন মোড় গ্রামের মৃত মাজম আলীর ছেলে।

জানা যায়, প্রতিদিনের মতো শহিদুল শনিবার তার ঘোড়াটিকে গোয়াল ঘরে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। রবিবার সকালে গোয়াল ঘর থেকে বের করতে গেলে ঘোড়াটি আর পাওয়া যায়নি। না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন।

বাড়ির পাশে সামাজিক বনায়নে গাছের সঙ্গে গলায় রশি টাঙানো অবস্থায় ঘোড়াটিকে দেখে শহিদুলকে খবর দেয় স্থানীয়রা। তিনি গিয়ে তার প্রিয় ঘোড়াটি মৃত দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শহিদুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার সৎভাই আবদুস ছাত্তার, আবদুল হালিম, ভগ্নিপতি নছু মিয়া ও ভাতিজা হারুনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। তারাই আমার উর্পাজনের একমাত্র মাধ্যম ঘোড়াটি মেরে ফেলেছে।’

শহিদুল ইসলাম আরও জানান, ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করে দিনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা রোজগার করেন তিনি। আজ থেকে তা বন্ধ হয়ে গেলো। এসব কথা বলতে বলতে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন শহিদুল।

তার তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে সুখী ও প্রথম শ্রেনি পড়ুয়া ছেলে আবদুল্লাহ ঘোড়াটি না পেয়ে বাড়িতে পড়ে থাকা ঘোড়ার গাড়ি ধরে কান্নাকাটি করছে। শহিদুল জানান, ‘এর আগেও তারা কয়েকবার আমাকে হুমকি দিযেছে। তাছাড়া আরেকবার ঘোড়াটি মেরে ফেলার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে সখীপুর থানায় রবিবার বিকেলে ওই চারজনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘোড়া একটি পশু। তার কোন দোষ নেই। একটি পশুকে এভাবে গলায় রশি দিয়ে মেরে ফেলা সত্যিই দুঃখজনক!’

এ বিষয়ে সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক এসআই আইয়ুব আলী বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

Bootstrap Image Preview