Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দুধে কীটনাশক, অ্যান্টিবায়োটিক, অণুজীব ও সিসা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৫:৪৯ PM
আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:০৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


গরুর দুধ, প্যাকেটজাত দুধ, দই ও গোখাদ্যে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক, নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের উপাদান ও বিভিন্ন অণুজীব পাওয়া গেছে। আজ (১০ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এমন ভীতিকর তথ্য জানিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি (এনএফএসএল)।

সংস্থাটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আর্থিক সহায়তায় গাভির খাবার, দুধ, দই ও প্যাকেটজাত দুধ নিয়ে এই জরিপের কাজ করেছে।

এনএফএসএল বলছে, ঢাকাসহ ৪টি জেলার ২৭টি উপজেলা/থানা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গরুর দুধ সরাসরি খামার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। একই সাথে উক্ত খামার থেকেই খাবার সংগ্রহ করা হয়েছে। দই ঢাকা শহরের বিভিন্ন ব্র্যান্ড দোকান ও আশপাশের উপজেলার দোকান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

বাজারে প্রচলিত প্রায় সকল ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত তরল দুধ এবং আমদানি করা প্যাকেটজাত দুধ বিভিন্ন সুপার স্টোর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো নির্দিষ্ট নিয়মে ল্যাবরেটরীতে পৌঁছানোর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে ।

গবেষকেরা বলছেন, প্রায় সব গোখাদ্যে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কীটনাশকও মিলেছে কোনো কোনো খাবারে। সিসা ও ক্রোমিয়ামও আছে।

মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এগুলো। সিসা ও ক্রোমিয়াম ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গোখাদ্যের ৩০টি নমুনা গবেষণা শেষে দেখা গেছে, এর মধ্যে কীটনাশক (২ নমুনায়), ক্রোমিয়াম (১৬টি নমুনায়), টেট্রাসাইক্লিন (২২টি নমুনায়), এনরোফ্লোক্সাসিন (২৬টি নমুনায়), সিপ্রোসিন (৩০টি নমুনায়) এবং আফলাটক্সিন (৪টি নমুনায়) গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রা পাওয়া যায়।

গাভির দুধের ৯৬টি নমুনার মধ্যে ৯ শতাংশ দুধে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কীটনাশক, ১৩ শতাংশে টেট্রাসাইক্লিন, ১৫ শতাংশে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রায় সিসা পাওয়া যায়। ৯৬ শতাংশ দুধে মেলে বিভিন্ন অণুজীব।

প্যাকেটজাত দুধের ৩১টি নমুনায় ৩০ শতাংশে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি হারে আছে টেট্রাসাইক্লিন। একটি নমুনায় সিসা মিলেছে। একই সঙ্গে ৬৬ থেকে ৮০ শতাংশ দুধের নমুনায় বিভিন্ন অণুজীব পাওয়া গেছে।

দইয়ের ৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে একটিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সিসা পাওয়া গেছে। আর ৫১ শতাংশ নমুনায় মিলেছে বিভিন্ন অণুজীব।

এনএফএসএলের এই গবেষণা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লুৎফুল কবির বলেন, যেসব উপাদান পাওয়া গেছে, এর মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিকের উপাদানই বেশি—টেট্রাসাইক্লিন, এনরোফ্লোক্সাসিন, সিপ্রোসিন ও আফলাটক্সিন অ্যান্টিবায়োটিক। এগুলো সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়ার অর্থ হলো এগুলো যেকোনো বয়সী মানুষের শরীরে ঢুকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেবে।

আজ রাজধানীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদের সামনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধান এবং এএফএসএ’র প্রধান অধ্যাপক ড. শাহনীলা ফেরদৌসী এই গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।

Bootstrap Image Preview