টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বন্যায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় পাঠদান চলছে একটি বাড়ির আঙ্গিনায় খোলা আকাশের নিচে। এমন দৃশ্যায়ন আর দুর্ভোগের মধ্যেই পরিচালিত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে বন্যায় নদীগর্ভে বিলীন হয় গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির ভবন। এরপর থেকেই ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে একটি বাড়ির আঙ্গিনা আর খোলা আকাশের নীচে। তবে ওই বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত থাকলেও চার শিক্ষক দিয়েই চলছে তাদের শিক্ষাদান কার্যক্রম। এছাড়াও তিনটি শ্রেণির পাঠদান একই স্থানে চলায় এর শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী ভালোভাবে কেউই কারো কথা শুনতে পারে না। বন্যার পর থেকে বিদ্যালয়টির এমন বেহাল দশা স্বত্তেও রোদ, গরম আর শীতের কনকনে ঠাণ্ডাকে চোখ রাঙিয়েই চলছে এর পাঠদান। এর ফলে একটু বৃষ্টি নামলেই শিক্ষার্থীদের ছুটি দিতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা।
অভিভাবক মো. সুরুজ মিয়া বলেন, আমরা খুবই বিপাকে পড়েছি। বাচ্চাদের খোলা আকাশের নিচে পড়ার জন্য পাঠাতে পারছি না, আবার ঘরে বসিয়ে রাখতেও পারছি না। এ পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে আমাদের দাবি দ্রুত ভাঙ্গনের হাত থেকে এ বিদ্যালয় রক্ষা করাসহ একটি স্থায়ী ভবন নির্মাণ।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠার পরই বিদ্যালয়টি নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। বেশ কয়েকবার বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে গত ভাঙ্গনের পর বিদ্যালয়টি পুন:নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এরপরও উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়ছে। এর ফলে কমে যাচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে এ অঞ্চলের শিক্ষাক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন তারা।
গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আজম আলী বলেন, বর্ষা মৌসুমের আগেই এ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা না গেলে পাঠদান কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।
এ ব্যাপারে নাগরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আক্তার বলেন, ‘বিদ্যালয়টি পরিদর্শন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছি। এ ব্যতিতও স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহায়তায় প্রায় তিন লাখ টাকা বরাদ্দ প্রাপ্তি চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। খুব দ্রুতই বরাদ্দ প্রাপ্ত ওই টাকায় দিয়ে বিদ্যালয়টিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে টিনের ঘর নির্মাণ করে হলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এ কষ্ট লাঘব হতে পারে।