প্রতি বছরের মতো সারাদেশে পালিত হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে বিদ্যা, জ্ঞান, বাণী ও সুরের দেবী সরস্বতী পূজা। তবে এবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় কান্দি ইউনিয়নের আমবাড়ী গ্রামের যুবকরা নিজেদের উদ্দগ্যে ৪৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমায় সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছে। প্রতিমাটি তৈরি করেছেন শ্রীবাস গাইন (পাল)।
রবিবার সকাল ১০টায় আমবাড়ী গ্রামের সার্বজনীন শ্রী শ্রী রাধাগবিন্দ ও গণেশ পাগল সেবাশ্রম চত্ত্বরে নির্মিত ৪৫ ফুট উচ্চতার এই সরস্বতী প্রতিমায় পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এই পূজা দেখার জন্য আশপাশের এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ এসে জড়ো হয়েছেন সেখানে। পূজাকে কেন্দ্র করে বসেছে তিন দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা। আয়োজন করা হয়েছে ধর্মীয় যাত্রাপালা ও কবি গানের। এসব কারণে দূরদরান্ত থেকে আত্মীয়-স্বজনরাও গ্রামের মানুষের বাড়িতে ভিড় করেছেন।
পিরোজপুর থেকে আগত গৌতম ডাকুয়া বলেন, আমি আমবাড়ী গ্রামের জামাই। যখন জানতে পারলাম ৪৫ ফুট উচ্চতার সরস্বতী প্রতিমায় পূজা হবে, তখন পরিবারের সবাইকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে আসি। আমার জীবনে এত বড় সরস্বতী প্রতিমা দেখিনি।
প্রতিমাটি তৈরিকারী পাল শ্রীবাস গাইন (৪৫) বলেন, আমি ৬ সহকারীকে নিয়ে একমাস ধরে প্রতিমাটি তৈরি করেছি। এর আগেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের প্রতিমা তৈরি করেছি আমি। এ ধরনের প্রতিমা নির্মাণে দেড় লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেই আমি। তবে এটা আমার গ্রামের পূজা, তাই আয়োজকরা যা দিবে আমি তাতেই খুশি।
তিনি বলেন, এর আগে আমি ৪০ ফুট উচ্চতার প্রতিমা তৈরি করেছি। ৪৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমা তৈরি এবারই প্রথম।
এলাকার পুরোহিত সুমঙ্গল ঢালী (৬৫) বলেন, আমি চল্লিশ বছর ধরে পূজা করি। কিন্তু এত বড় প্রতিমায় কোনদিন পূজা করিনি। আজ আমার অনেক স্থানে পূজা করার কথা ছিল, কিন্ত সব বাদ দিয়ে এখানে পূজা করতে এসেছি।
পূজা কমিটির সভাপতি অন্তর গাইন (৩০) বলেন, স্থানীয় যুবকরা মিলে এই পূজার আয়োজন করেছে। এই পূজায় ৩ লক্ষাধিক টাকা খরচ হবে। আমরা এ ধরনের পূজার আয়োজন করতে পেরে আনন্দিত।
কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ বলেন, আমার ইউনিয়নে এতো বড় সরস্বতী পূজা হচ্ছে শুনে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। আগামীতে যাতে এই পূজা আরও বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়, তার জন্য আমি সার্বিক সহযোগিতা করবো।