Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

শরণার্থী ফুটবলার আরাবির মুক্তি চাইলেন থাই বালকদের উদ্ধারকারী ২ ডুবুরি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৪:৪৭ PM
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৪:৪৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


বন্যা কবলিত গুহা থেকে থাই বালকদের উদ্ধারকারী দুই অস্ট্রেলীয় ডুবুরি এবার শরণার্থী ফুটবল তারকা হাকিম আল আরাবিকে ছেড়ে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

গত বছরের জুলাইয়ে থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহায় আটকে পড়া কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধার করে অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বের উপাধি পেয়েছেন ডুবুরি রিচার্ড হ্যারিস ও ক্রেইগ চ্যালেন।

এখন তারা আরাবিকে মুক্তির দাবিতে প্রচারাভিযানে যুক্ত হয়েছেন। তাকে ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে থাই প্রধানমন্ত্রী প্রিয়ত চান-ওচার কাছে একটি চিঠি দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন ক্রেইগ চ্যালেন। কিন্তু বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেছেন।-খবর রয়টার্সের

নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, বাহরাইনি কর্তৃপক্ষের হাতে আল আরাবি নির্যাতিত হয়েছেন। কারণ ২০১১ সালের আরব বসন্তের সময় তার ভাইয়ের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল।

এদিকে শরণার্থী মর্যাদা সত্ত্বেও বাহরাইনি ফুটবলার হাকিম আল আরাবিকে গ্রেফতারের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ওপর দোষ চাপাচ্ছে থাইল্যান্ড।

থাই কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংককের উদ্দেশে আরাবি বিমানে ওঠার পর পরই ইন্টারপোলের রেড নোটিশ পাঠিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আর কেবল সে কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এ শরণার্থী ফুটবলারকে গ্রেফতার করে বাইরাইনে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া শুরু করলে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে পড়ে থাইল্যান্ড।

২০১১ সালে আরব বসন্ত সমর্থন থাকায় তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বাহরাইনের আদালত। নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করছেন আরাবি।

গত বছরের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়া থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ব্যাংককে মধুচন্দ্রিমায় এলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

২৫ বছর বয়সী এ ফুটবল তারকা বলেন, তাকে বাহরাইনে ফেরত পাঠানো হলে নির্মম নির্যাতনের শিকার হবেন। তিনি কেবল অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত যেতে চান এবং মেলবোর্ন ফুটবল ক্লাবের হয়ে তিনি খেলতে চান।

আরাবিকে মুক্তি দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার সুযোগ দিতে থাই কর্তৃপক্ষের প্রতি মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শিকল পরা অবস্থায় আরাবির ছবি দেখতে তার কষ্ট হয়।

হাকিম আল আরাবিকে বন্দি রাখতে দুই দেশের প্রতিযোগিতাকে দায়ী বলে বুধবার থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ায় ইন্টারপোলের বিষয়আশয় নিয়ে দায়িত্বরত একটি পুলিশ ব্যুরো থাই কর্তৃপক্ষকে আল আরাবির বিমানে ওঠা সম্পর্কে অবগত করে, তখন ঘটনাক্রমে থাইল্যান্ডে তিনি গ্রেফতার হন।

থাই কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাকিম আল আরাবি থাইল্যান্ডে আসার কয়েক দিন পর অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ বলেছে- তার বিরুদ্ধে জারি করা রেড নোটিশ বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে থাইল্যান্ডে তার বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে, যা থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয়।

বাহরাইন থেকে পালিয়ে আসার পর ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পান আল আরাবি। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে নিজ দেশে তিনি নিপীড়ন, আটক ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। বাহরাইনে তার বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা রয়েছে।

আল আরাবি বলেন, বাহরাইনে আমি কিছু করিনি, থাইল্যান্ডেও না- এমনকি অস্ট্রেলিয়ায়ও আমার বিরুদ্ধে কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। কাজেই আমাকে এভাবে কেন আটক রাখা হয়েছে?

‘বাহরাইনে আমার মতো মানুষের জন্য কোনো মানবাধিকার কিংবা নিরাপত্তা নেই,’ বললেন এ ফুটবলার।

গত বছরের নভেম্বরের শেষ দিকে স্ত্রীকে নিয়ে থাইল্যান্ডে মধুচন্দ্রিমায় যান ২৫ বছর বয়সী আল আরাবি। এর আগে পাঁচ বছর ধরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে একটি ক্লাবে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে খেলতেন।

দেশের বাইরে তার ভ্রমণ নিরাপদ কিনা তা জানতে অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার আগে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হন তিনি। তখন বাহরাইন ছাড়া যে কোনো দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল।

যদিও তার বোন বাহরাইন থেকে তাকে ঝুঁকির ব্যাপারে হুশিয়ারি করেছিলেন। কিন্তু বোনকে তিনি সান্ত্বনা দিয়েছিলেন এই বলে- ‘আমি এখন অস্ট্রেলিয়ায় সুরক্ষায় আছি। তারা আমার কিছু হতে দেবে না।’

কিন্তু থাই বিমানবন্দরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে দেশটির কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে। বাহরাইনের অনুরোধে নিয়মের বাইরে গিয়ে ইস্যু করা ইন্টারপোলের রেড নোটিশের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে।

বিধিমালা অনুসারে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে রেড নোটিশ জারি করতে পারে না ইন্টারপোল। পরে গত ৪ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে জারি করা নোটিশ তুলে নেয় বিশ্ব পুলিশ সংস্থাটি।

Bootstrap Image Preview