Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘৪০০ সাংবাদিক আমার হাতে, আমার বিরুদ্ধে লিখলে কিছুই হবে না’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৮:৩৩ PM
আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৮:৩৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। ওই হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ সরকারি ওষুধ অহরহ পাচার হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অথচ এ পাচার চক্রের মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর এ কারণে বিনামূল্যের ওষুধ অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে কিনতে হচ্ছে রোগীদের।

সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠান না থাকলেও হাসপাতালের ঠিকাদারি কাজ পাচ্ছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এবারের শীতে হাসপাতালের মেঝেতে অবস্থান নেয়া রোগীদের অনেকে কম্বল, বালিশ ও মশারী পাচ্ছেন না। যারা পেয়েছেন তারা এসব সামগ্রি নিজেরা সঙ্গে নিয়ে এসেছেন নয়তো হাসপাতালের কর্মচারীদের থেকে চড়া দামে কিনে নিতে হয়েছে। অথচ হাসপাতালের পক্ষ থেকেই কোনো চার্জ ছাড়া কম্বল, চাদর ও বালিশের কাভার দেয়ার নিয়ম রয়েছে। সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে এভাবেই শীতে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা প্রতিদিন।

জানা গেছে, এসব দুনীর্তির পেছনে যিনি কলকাঠি নাড়ছেন তিনি ওই হাসপাতালের হিসাবরক্ষক আশরাফ মজিদ। মানিক লন্ড্রি এবং সাদেক লন্ড্রি নামের দুই নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে হাসপাতালের ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেন এই আশরাফ মজিদ। আর সে বাবদ ওই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে মাসোয়ারা।

সূত্রে জানা গেছে, ওই হিসাবরক্ষকের সহযোগিতায় প্রতি মাসে হাসপাতালের কাপড়, কাঁথা, কম্বল এবং লেপ-তোশক ইত্যাদি ধোয়ার কাজের জন্য মোটা অঙ্কের বিল উত্তোলন করছে মানিক লন্ড্রি এবং সাদেক লন্ড্রি। হাসপাতালের বিল সিট অনুযায়ী, কাপড়-চোপড় ধোয়ার কাজে শীত ও গ্রীষ্মকালীন প্রতি মাসে গড়ে ঠিকাদার প্রায় দেড় লাখ টাকা করে উত্তোলন করছে।

এভাবে হাসপাতালের বিভিন্ন কাজে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার পাহাড় গড়ে কুড়িগ্রাম পৌর শহরের গস্তিপাড়ায় প্রায় ৬০ লাখ টাকা দিয়ে দুটি জমি কিনেছেন আশরাফ মজিদ। এর একটিতে দুই কোটি টাকা মূল্যের পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেছেন।

এ ছাড়াও গ্রামের বাড়িতে প্রায় ২০ লাখ টাকা মূল্যের ৮০ শতক জমি রয়েছে তার। হঠাৎ করেই আশরাফ মজিদের আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি চোখে পড়েছে স্থানীয়দের।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, আশরাফ মজিদ একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারি শিক্ষকের ছেলে। তার ছয় ভাই-বোন। এর আগে তাদের এতো বিত্ত-বৈভব দেখা যায়নি। কিন্তু হঠাৎ করে আশরাফ মজিদ শহরে জায়গা কিনে বাড়ি করায় অবাক হয়েছেন তারা।

দুই ঠিকাদার মানিক লন্ড্রি এবং সাদেক লন্ড্রির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবে দুই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম শহরের লন্ড্রি ব্যবসায়ী সালাম বলেন, আমি আট বছর ধরে এখানে লন্ড্রির ব্যবসা করছি। এখানে মানিক লন্ড্রি এবং সাদেক লন্ড্রি নামে কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, আর ছিলও না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো তথ্য দিতে বাধ্য নই জানিয়ে হাসপাতালের হিসাবরক্ষক আশরাফ মজিদ বলেন, কুড়িগ্রামের ৪০০ সাংবাদিকের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। আমার বিরুদ্ধে লিখলে কিছুই হবে না।

কুড়িগ্রাম শহরে দুটি জমি ও বাড়ির প্রসঙ্গে তিনি জানান, এসব সম্পদ তিনি বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ২৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে করেছেন।

Bootstrap Image Preview