Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

এখন ঘুরতে হয় না, বিদ্যুতের সংযোগই পৌঁছে যায় মানুষের কাছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১১:৪৮ AM
আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৩:৫৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদ্যুতের জন্য এখন আর মানুষকে ঘোরাঘুরি করতে হয় না, বরং বিদ্যুতের সংযোগই মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।

আজ বুধবার গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ছয়টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও ১২টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে সব থেকে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে বিদ্যুৎ। আমরা মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এখন বিদ্যুতের উৎপাদনের মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে আলো জ্বালবো, এটাই আমাদের লক্ষ্য।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন আর বিদ্যুতের জন্য মানুষকে ছোটাছুটি করতে হয় না। কারণ সরকার এখন মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে। দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ আরও উন্নত হোক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে আমাদের সুবর্ণজয়ন্তী। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্যমুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, ইনশাআল্লাহ। 

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ২০২০-২০২১ এই বর্ষকে আমরা মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। কাজেই বাংলাদেশের জনগণের সকলে এটা উদযাপন করবেন। বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্যমুক্ত বাংলাদেশ। 

শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলাম। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম, স্বাক্ষরতার হার বাড়িয়েছিলাম, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়, ফলে মানুষের মধ্যে একটি আশার আলো জেগেছিল। কিন্তু সেই আলো নিভে যায় বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা এটাই ছিল তাদের একমাত্র কাজ।

তিনি আরো বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নের ফলে মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। সেই সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করছি।

বক্তব্য শেষে এক হাজার ৫৭ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ছয়টি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনকৃত ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে—সিরাজগঞ্জ ২৮২ মেগাওয়াট সিম্পেল সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভোলা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, চাঁদপুর ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আশুগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, খুলনার রূপসায় ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং চট্টগ্রামের জুলদা ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (তৃতীয় ইউনিট)।

নয়টি উপকেন্দ্র হচ্ছে—রামগঞ্জ, বরিশাল (উত্তর), বারইয়ারহাট, শিকলবাহা, জলঢাকা, সুনামগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, রাঙামাটি ও মাতারবাড়ী।

শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আসা উপজেলাগুলো হচ্ছে—হরিণাকুণ্ডু, ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গা, গোয়ালন্দ, কালুখালী, বামনা, লাখাই, শায়েস্তাগঞ্জ, আজমেরীগঞ্জ, বাহুবল, মেলান্দহ এবং ইসলামপুর।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৩০৬টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৬৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ এরই মধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৩টি উপজেলা চলতি বছরের জুন নাগাদ উদ্বোধন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, আমরা সারাদেশে প্রায় ১৮৬টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি। বাকি যে উপজেলা আছে তার মধ্যে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ বিদ্যুতায়ন হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি এই বছরের শেষের দিকে প্রতিটি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করতে পারবো।

নসরুল হামিদ বিপু বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের ইশতেহার অনুযায়ী ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন হলো সেগুলো নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করবে এবং স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ সরবাহ করা হবে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে সন্দ্বীপ পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সাগরের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবল স্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ১৪ কিলোমিটার সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রায় আড়াই লাখ মানুষকে আমরা বিদ্যুতায়ন করবো। বর্তমানে সেখানে ১০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবাহ করছি। এর পর আমরা হাতিয়া এবং কুতুবদিয়ায় দ্রুততার সাথে বিদ্যুৎ দেয়া যায় সেটার ব্যবস্থা করবো।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতির এক বছর আগেই সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর ২০২১ সালের ভিশনের দুই বছর আগেই এ বিদ্যুতায়ন করা হবে।

Bootstrap Image Preview