Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সমকামিতার জেরে বিজিবি সদস্য খুন, মূল আসামি গ্রেফতার

হৃদয় দেবনাথ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:০৫ PM
আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:১৬ PM

bdmorning Image Preview


কমলগঞ্জের শমশেরনগর চাতলাপুর সড়কের তানজিম আবাসিক হোটেলের গোসলখানা থেকে গত ২৯ ডিসেম্বর সাইফুল ইসলাম (২৪) নামে এক বিজিবি সদস্যের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার ১ মাস ২ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল ৪৬ নং বিজিবি ব্যাটেলিয়নের ফটকের সামনের সড়ক থেকে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মূল হত্যাকারী আরেক বিজিবি সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতার হওয়া মূল আসামি কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক ক্যাম্পের সদস্য আসাদুল ইসলাম। সে দিনাজপুর জেলার বাঁশ বাড়িয়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে।  

নিহত বিজিবি সদস্য সাইফুল ইসলাম একই উপজেলা ও একই ইউনিয়নের শরীফপুর ক্যাম্পের সদস্য সাইফুল ইসলাম। সে চট্রগ্রামের মিরসরাই উপজেলার দুয়ারু এলাকার নুরুল আমীনের একমাত্র ছেলে।  

পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে লালারচক বিজিবি ক্যাম্পের সদস্য আসাদুল ইসলাম নিহত শরীফপুর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্য সাইফুল ইসলামের নামে শমশেরনগরস্থ তানজিম আবাসকি হোটেলের তৃতীয় তলায় ২১১ নম্বর কক্ষ কয়েক ঘন্টার জন্য ভাড়া নিয়েছিল। পরে বিজিবি সদস্য সাইফুল ইসলামকে মুঠোফোনে ডেকে এনে প্রথমে ঘুমের ঔষধ মিশ্রিত কোমল পানীয় পান করায়।

সাইফুল কোমল পানীয় পান করে হোটেল কক্ষের গোসল খানায় মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়লে সহযোগী বিজিবি সদস্য আসাদুল ইসলাম গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর চাকু দিয়ে তার পেট কেটে ফেলে। এরপর গোসল খানায় লাশ ফেলে রেখে হোটেল কক্ষ তালাবদ্ধ করে হত্যাকারী আসাদুল পালিয়ে যায়। যাবার সময় হত্যাকারী হোটেল ব্যবস্থাপকের অনুপস্থিতিতে কক্ষের তালা চাবি অফিসে রেখে যায়।

ঘটনার ৪ দিন পর ২৯ ডিসেম্বর তৃতীয় তলার পানির লাইনে কাজ করতে গিয়ে ২১১ নং কক্ষের গোসলখানায় বিজিবি সদস্য সাইফুলের লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পায়।  

শ্রীমঙ্গলস্থ ৪৬ নং বিজিবি ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার ল্যা. কর্ণেল আব্দুল্লাহ মোমেনের উপস্থিতিতে বিজিবি সদস্য সাইফুলের লাশ উদ্ধারকালে প্রাথমিক তদন্তে মূল হত্যাকারী অপর বিজিবি সদস্য আসাদুলের পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল। এরপর থেকে বিজিবি ব্যাটেলিয়নে মূল হত্যাকারী আসাদুলকে আটকিয়ে রেখে বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৩১ জানুয়ারি তাকে বিজিবি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ওইদিন সন্ধ্যায় অরুপ কুমার চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল আসামি আসাদুলকে গ্রেফতার করে। হত্যাকারী গ্রেফতার সম্পর্কে এই মুহুর্তে বিজিবির পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া না গেলেও শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী হত্যাকারী আসাদুলকে বিজিবি থেকে বরখাস্ত করে বিতাড়িত করার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

এর আগে তিনি বিজিবির সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাঁর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সন্ধ্যায় বিজিবি ব্যাটেলিয়ল ফটকের সামনের সড়ক থেকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় আসামী বহিস্কৃত বিজিবি সদস্য আসাদুলকে মৌলভীবাজার আদালতে বিজ্ঞ হাকিমের কামরায় প্রেরণ করা হয়েছে। 

পরিদর্শক অরুপ কুমার চৌধুরী আরও বলেন, হত্যার কারণ সম্পর্কে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে এই দুই বিজিবি সদস্যের মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। নিহত বিজিবি সদস্য দেশের বাড়িতে বিয়ে করে ক্যাম্পে ফিরে আর আসাদুলের সাথে যোগাযোগ রাখছে না। এই প্রতিশোধে বিজিবি সদস্য সাইফুলকে হোটেলে ডেকে এনে হত্যা করে আসাদুল।

Bootstrap Image Preview