সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের ফরিদপাঙ্গাসী গ্রামে নিখোঁজের দুই দিন পর রেকাবুল ইসলাম (২৫) নামক এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে করতোয়া নদী থেকে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রেকাবুল ইসলাম ফরিদপাঙ্গাসী গ্রামের আলতাফ হেসেনের ছেলে।
পুলিশ এ ঘটনায় নিহতর পিতা আলতাফ হেসেন এটাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে ১০ জনকে আসামি করে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ হত্যার ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, গত ২৮ জানুয়ারি (সোমবার) রাতে রেকাবুল ইসলাম তার ৬/৭ জন বন্ধুর সাথে বাড়ির কাছের করতোয়া নদীতে একটি নৌকার মধ্যে জুয়া খেলছিল। এ সময় ফরিদপাঙ্গাসী নতুনপাড়া গ্রামের কায়েম উদ্দিনের ছেলে রাসেল (২২), শ্রীফলতলা গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে মনিরুল (২৩), মজিবরের ছেলে চয়েন (২৪), রমজান আলীর ছেলে রাসেদুল (২২), মোজাহারের ছেলে শাহীন (২২), সাইফুল ইসলামের ছেলে মমিনসহ (২৪) ৮/১০জন ভূয়া র্যাব সেঁজে বাঁশি বাজিয়ে ওই জুয়াড়িদের তাড়া করে।
এ সময় র্যাবের ভয়ে নৌকা থেকে জুয়াড়িরা পানিতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার দিয়ে অন্য তীরে উঠে পালিয়ে যায়। কিন্তু রেকাবুল পানিতে ঝাপ দিয়ে আর ওঠেনি। সেই থেকে সে নিখোঁজ ছিল।
তার স্বজনেরা ও এলাকাবাসী গত দুই দিন ধরে অনেক খোঁজাখুজির পরেও রেকাবুলের সন্ধান না পেয়ে স্থানীয় শাহজাদপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে ফেরৎ চলে যায়।
এলাকাবাসি বুধবার বিকেলে করতোয়া নদীতে রেকাবুলের লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। শাহজাদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ব্যাপারে হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার আকতার হোসেন বলেন,আমাদের কয়েকজনের সন্দেহ হলে কালো মুখোশধারী রাসেল নামের ভূয়া এক র্যাবকে আটক করা হয়। সে জানায়, জুয়ারীদের ভয় দেখানোর জন্য তারা কয়েক জন ভূয়া র্যাব সেজে তাদের ধাওয়া করেছিল। এ সময় তার সাথের অন্য ব্যক্তিদেরও নাম পরিচয় সে বলে দেয়।
এ ব্যাপারে নিহতর পিতা আলতাফ হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর লাশ গুম করার জন্য করতোয়া নদীতে ফেলে দিয়েছে হত্যাকারীরা। এ হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ভুয়া র্যাব ও জুয়ার আসরের গল্প ও নাটক সাজানো হয়েছে। আমি এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাকিবুল হুদা জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহতর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে নিহতর পিতা বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।