Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

কুচলিবাড়ি সড়কের বেহাল দশা, দূর্ভোগের ২৫ হাজার মানুষ

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:৫৫ PM
আপডেট: ৩০ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী জনগুরুত্বপূর্ণ ওই উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের সীমান্তগ্রাম কলসিমুখ আঞ্চলিক সড়কের সাড়ে ৬ কিলোমিটার সড়কে ৩ কিলোমিটারে অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ বেহাল দশা সড়কটি দিয়ে উপজেলা সদরে চলাচল করতে গিয়ে ওই এলাকার ৩০টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। সড়কটির এই দুরাবস্থা বিরাজ করলেও এলাকার মানুষের জনদূর্ভোগ লাঘবে প্রচেষ্টা নেই সংশ্লিষ্টদের।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিডি) পাটগ্রাম উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের দিকে স্থানীয় এলজিইডির অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে পাটগ্রাম-ললিতারহাট সড়কটির সাড়ে ৩ কিলোমিটার ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১ সালের দিকে ললিতারহাট থেকে সীমান্ত গ্রাম কলসিরমুখ পযর্ন্ত সড়কটির তিন কিলোমিটার কার্পেটিং করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ওই সড়কের অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।    

এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টি ও প্রতিনিয়ত যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানা-খন্ডসহ সড়কের দু'পাশের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি সংস্কার করা না হলে ললিতারহাট, ডাঙাপাড়া, কবরস্থান, কুচলিবাড়ির, কলসিরমুখ বিজিবি ক্যাম্প, কবরস্থান, গিরিয়ারপাড়, দৌলতপুরগ্রাম, মেম্বরের বাড়ি, কুচলিবাড়ি, দোইয়ালেরটারী, টেইলেনটারী, কলসিরমুখ, ভেদলোটারী, ডাঙাপাড়া, নদীরপাড় দরগারপাড়সহ অন্তত ৩০ টি গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।

দীর্ঘদিন থেকে সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্টদের নিকট আবেদন করেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সড়কটির এই দুরাবস্থা বিরাজ করলেও এলাকার মানুষের জনদূর্ভোগ লাঘবে প্রচেষ্টা নেই সংশ্লিষ্টদের। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি মেরামতে যেন দেখার কেউ নেই। তাই সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে জনস্বার্থে এ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছে এলাকাবাসীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সরকারি কলেজ মোড় থেকে করসিরমুখ পযর্ন্ত প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটারের তিন কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া বের হয়ে গেছে এবং সড়কটির দু'পাশে ঢালে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে একটি গাড়ির পাশ কেটে আরেকটি গাড়ি যেতে পারছে না। তার সাথে সড়কটিতে একটি সেতুর দু'পাশে মুখেও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। 

এ সময় ওই ইউনিয়নের দৌলতপুরগ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল ওহাব (৫০) বলেন, র্দীঘদিন ধরে এ সড়কটি ভেঙে বড় বড় গর্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে কৃষক ও মানুষতো দূরের কথা রোগী নিয়ে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। দীর্ঘদিন থেকে চলাচলে অনুপযোগী এই সড়কে চলতে গিয়ে প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। তাই এটি সড়ক তো নয়, যেন মরণ ফাঁদ। তাছাড়াও মালামাল পরিবহনে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে ভাড়া। 

কসসিরমুখ গ্রামের লিয়াকত মিয়াসহ পাঁচজন কৃষক বলেন, তাঁদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য উপজেলা সদরের হাটবাজারের নিতে হয়। কিন্তু এই ভাঙাচোরা খালা-খন্ডে ভরা সড়কের কারণে ভ্যান চালকরা ভাড়া নিয়ে চায় না। আবার নিলেও এ জন্য অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়ার গুনতে হচ্ছে তাঁদেক। আবার হাটে সময় মত পণ্য নিতে না পারলে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হয়। ফলে সড়কের কারণে দুইদিকেই ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে। সাত-আট বছর হলেও ভাঙাচোরা এ সড়কটি সংস্কার করা কথা এখনও কেউ ভাবচ্ছে না।  

কয়েকজন বিজিবি'র সদস্য বলেন, তাঁদের সীমান্ত ফাঁড়িতে যাওয়া একমাত্র সড়ক এটি। এর বিকল্প একটি সড়ক থাকলেও সেটি মাটির রাস্তা। ফলে সীমান্তে কোন ঘটনা ঘটলে এই ভাঙ্গাচোরা রাস্তা দিয়ে গেলে সময়মত ঘটনাস্থলে যাওয়া যায় না।

মোহাম্মদ আলী নামে একজন ভ্যান চালক জানান, ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে প্রায় তাঁর ভ্যান ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ জন্য বেশি মাল নেয়া যায় না। পেটে দায় বাধ্য হয়ে ভাঙাচোরা রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। এতে গাড়িও ভাঙচ্ছে বসেও থাকতে হচ্ছে।

কুচলিবাড়ি ইউনিয়নর চেয়ারম্যান হামিদুল হক বলেন, সড়কটির বেহাল অবস্থার কথা ইতিমধ্যে উপজেলা সমন্বয় বৈঠকেও বলা হয়েছে। তাছাড়াও স্থানীয় এলজিইডির প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছে সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।  

পাটগ্রাম উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিডি)'র প্রকৌশলী আবু তৈয়ব মোঃ শামসুজ্জামান জানান, গত বছরে ওই সড়কের প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। তবে এর বাকী অংশের সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। নতুন করে প্রকল্পের আওতায় অনুমতি আসলেই। সড়কটি মেরামত করার কাজ শুরু করা হবে। 

 

 


 

Bootstrap Image Preview