Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যেসব কারণে পুরুষের বন্ধ্যত্ব হতে পারে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:২১ PM
আপডেট: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:২১ PM

bdmorning Image Preview


বন্ধ্যাত্বকে বলা হয় দাম্পত্য জীবনের অভিশাপ। কারণ কোন দম্পতির শখ হয় না, একটি শিশু সন্তানের হাসি দেখার। তবু আমাদের চারপাশে অনেকেই বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভোগেন। দুই বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি সময় কোনো ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বন্ধ্যত্ব বলা হয়। সাধারণত প্রতি ১০০ দম্পতির মধ্যে ৮৪ প্রথম বছরে এবং ৯২টি দ্বিতীয় বছরের মধ্যে গর্ভধারণে সক্ষম হন। সে ক্ষেত্রে গড়ে আটজন ব্যর্থ হন।

বন্ধ্যাত্বের কারণগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রী, ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী এবং ১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ত্রুটির জন্য গর্ভধারণ হয় না। বাকি ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে অনুর্বরতার কোনো সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও আমাদের দেশে এখনো গর্ভধারণ না করার জন্য প্রথমেই মেয়েদের দায়ি করা হয়।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?

এক বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় কোনো ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবে বয়স ত্রিশের বেশি হলে ছয় মাস চেষ্টার পরই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

বন্ধ্যত্বের কারণসমূহ

নানা কারণেই বন্ধ্যত্ব হতে পারে। স্বামী-স্ত্রী যে কোনো একজন বা উভয়ের ক্ষেত্রে সমস্যা থাকতে পারে। গর্ভধারণের জন্য দরকার একটি সুস্থ ওভাম (ডিম্বাণু), সবল বীর্য ও স্বাভাবিক জরায়ু। এর যে কোনো জায়গায় সমস্যা হলে গর্ভধারণে ব্যর্থতা দেখা দিতে পারে।

প্রাথমিকভাবে বন্ধ্যত্বের কারণকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এগুলো হচ্ছে- এনুভলেশন (ডিম্বাশয় থেকে ওভাম বা ডিম নিঃসরণ না হওয়া), জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যা ও পুরুষ সঙ্গীর সমস্যা।

ডিম্বস্ফোটন না হওয়ার কিছু কারণসমূহ

১. পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম
২. হরমনের অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ। প্রলেক্টিন, থাইরয়েড হরমোন অথবা পিটুইটারি FSH, LH হরমোনের অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ ডিম্বস্ফোটন ব্যাহত করে।
৩. ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বা কম থাকা।
৪. প্রিমেচিউর ওভারিয়ান ফেইলিউর
৫. অতিরিক্ত মানসিক চাপ।
৬. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ক্যান্সার কিংবা কিডনি রোগেও অভুলেশন ব্যাহত হতে পারে।
৭. কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি সাময়িক বা পুরোপুরিভাবে ওভারিকে অকার্যকর করে দিতে পারে।

জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যা

১. জরায়ুর টিউমার যেমন এডিনোমায়োসিস, ফাইব্রয়েড বা পলিপ।
২. পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ (পিআইডি) অথবা যে কোনো ইনফেকশনের কারণে ডিম্বনালী বন্ধ হয়ে ওভাম এবং শুক্রাণ নিষিক্তকরণের পথ বন্ধ করে দিতে পারে।
৩. এন্ডোমেত্রিওসিস বন্ধ্যত্বের একটি পরিচিত কারণ। এ রোগের লক্ষণ মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, পেটে ব্যথা ইত্যাদি।
৪. ইনফেকশন বা এন্ডোমেত্রিওসিস জরায়ু এবং এর আশপাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক এনাটমি নষ্ট করে বন্ধত্ব্যের কারণ ঘটায়।

৩০-৫০ শতাংশের ক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গীর সমস্যার কারণে বন্ধ্যত্ব হতে পারে।

১. শুক্রাণ বা বীর্য যথেষ্ট গতিশীল না হলে বা অস্বাভাবিক গঠনগত কারণে বন্ধ্যত্ব হতে পারে।
২. কোনো কারণে শুক্রাণু তৈরি ব্যাহত হলে যেমন- জীনগত ত্রুটি, ভেরিকোসেলি, টেস্টিসের টিউমার বা ইনফেকশন অথবা কোনো ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াজনিত কারণে স্বাভাবিক শুক্রাণু তৈরি বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।

পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই গর্ভধারণের হার বয়স বাড়ার সঙ্গে কমে যায়। ৩৫ বছরের পর থেকে মেয়েদের ওভুলেশনের হার কমতে থাকে, একই সঙ্গে শুক্রাণুর কার্যকারিতাও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কমে। তাই এ চিকিৎসায় বিলম্ব হলে সাফল্যের হারও কমে যায়।

Bootstrap Image Preview