Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

অবদানে শীর্ষে হওয়া সত্ত্বেও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত প্রবাসীরা

সাইদুল ইসলাম সুমন
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:৩৬ AM
আপডেট: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:৪৫ AM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশ প্রায় ১৭ কোটি সন্তানের মধ্যে প্রায়  দেড় কোটি সন্তান অবস্থান করতেছে বিশ্বের প্রায় ১৬৪টি দেশে। বিভিন্ন দেশে অবস্থানের ফলে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ রেমিট্যান্স আসতেছে বাংলাদেশে।

নিজের ও পরিবারের কথা চিন্তা করে ভিন্ন দেশে পাড়ি জমালে ও প্রবাসীদের আয়ের একটি অংশ দেশের কাজেই ব্যবহার হচ্ছে। আর এই কথা চিন্তা করে প্রবাসী সন্তানের মনে আনন্দ পায় যে আমার একটি টাকা যখন রেমিট্যান্স হয়ে দেশের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার হয় তখন একজন প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায়, মা বাবা পরিবার দেশ মাতৃভূমি ছেড়ে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে পড়ে থাকলে ও মনটা আর খারাপ থাকে না কেননা আমি তো সত্তিকারের একজন দেশপ্রেমিক হতে পেরেছি দেশের জন্য কাজ করতে সক্ষম হয়েছি।

একটি দেশকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই সেই দেশের অর্থনীতি মজবুত হতে হবে। স্বাধীনতা অর্জনের ৪৭ মধ্যে বাংলাদেশ যে পরিমাণ এগিয়ে গেছে তা একমাত্র সম্ভব হয়েছে দেশে বিপুল পরিমাণে রেমিট্যান্স আসার কারণেই বিগত বছরগুলোর রেমিট্যান্সের পরিমাণ দেখলেই তা বুঝা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে। সদ্য শেষ হওয়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা। এটি গত ৩ অর্থবছরে সর্বোচ্চ আর গত অর্থবছর থেকে ১৭ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে এসেছিল ১ হাজার ২৭৭ কোটি ডলার। গত জুনে দেশে ১৩৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৩৩ কোটি ৮৫ লাখ ডলার।
বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ২৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০১ কোটি ৮৪ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১ কোটি ১৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এরআগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল।

দেশের রেমিটেন্সের অর্ধেকের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের ছয় দেশ-সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত ও বাহরাইন থেকে।

কেননা এই দেশগুলোতেই বাংলাদেশী রেমিট্যান্স যোদ্ধা সন্তানের সংখ্যা বেশী। আচ্ছা যাই হোক নিজেদের চোখেই দেখেছেন বাংলাদেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা সন্তানরা প্রবাসে অবস্থানের ফলে দেশে কি পরিমাণ রেমিট্যান্স আসতেছে আর যা বাংলাদেশী টাকায় পরিমাণ কত হবে যা অনেকের আইডিয়ার বাহিরে, এবার আসুন কিছু পরিবর্তন কথা বলি বাংলাদেশে বর্তমানে অর্থের অভাবে সন্তানদের পড়াশুনা বন্ধ হচ্ছে না পরিবারের কেউ না কেউ প্রবাসে আছে, যৌতুকবিহীন বিবাহ হ্রাস পেয়েছে প্রবাসীদের অবদানে, বিবাহ করতে প্রবাসী সন্তানরা বিপুল টাকা ব্যয় করে এবং গহনা থেকে শুরু করে কোন কিছুই কমতি রাখে না। বাংলাদেশের গ্রামগুলোর দিকে চোখ রাখুন আধাপাকা বাড়ি থেকে শুরু করে সব কিছুরই পরিবর্তন হয়েছে বড় বড় দালান গ্রামে ও গড়ে উঠেছে। আর শহরের কথা তো নাই বললাম উঁচু উঁচু যে ভবন দেখা যায় এর বেশীভাগ মালিকানা প্রবাসীদের, পরিবারের কর্তা প্রবাসী তাই নামি দামি ব্যান্ডের দুধ থেকে এমন কিছু বাদ নেই যা দেশে পাঠানো হচ্ছে না। সন্তান কিংবা ভাইকে বাই সাইকেল বাদ দিয়ে মোটরসাইকেল কিনে দেয়া হচ্ছে যা প্রবাসে অর্জিত টাকায়, নিজের পরিবারকে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্য বিত্ত, মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত করতে পেরেছে একমাত্র প্রবাসে থাকার কারণেই, এমন অসংখ্য অবদান প্রবাসীদের যা বলে শেষ করা যাবে না কিন্তু এত অবদান থাকার ফলে ও এই প্রবাসী রেমিট্যান্স দেশের সূর্য সন্তানদের কোন মর্যাদা দেয়া হয় না, প্রতি নিয়ত তাদের ছোট করা কিংবা খাটো করে দেখা হয়ে থাকে।
প্রবাসীরা কিছুই চায় না, তারা শুধু চায় তাদের একটু সম্মান করা হোক। প্রবাসীদের ছাড়া বাংলাদেশ কল্পনা করা কখনো সম্ভব নয়। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল করতে অবশ্যই প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের প্রয়োজন রয়েছে তাই প্রবাসীদের কখনোই ছোট করে দেখা কাম্য নয়।

Bootstrap Image Preview